অর্ণব আইচ: অনলাইন শপিং সাইটে অর্ডার দিয়েছিলেন অক্সিজেন যন্ত্রের। তার বদলে বাড়িতে এসে পৌঁছল তিন জোড়া জুতো! এই অত্যাবশ্যক যন্ত্রটির বদলে জুতো পেয়ে হতবাক দক্ষিণ শহরতলীর নেতাজিনগরের বাসিন্দা এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্তা। এই বিষয়ে ওই অনলাইন বিপণিতে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল পাওয়া যায়নি। এরপর নেতাজিনগর (Netaji Nagar) থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ৭০ বছরের দীনেশচন্দ্র দাস। তাঁর অভিযোগ ওই অনলাইন বিপণি সংস্থা, তার ডেলিভারি বয় ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
এর আগেও অনলাইন বিপণিতে জিনিস কিনে সমস্যায় পড়েছেন বহু শহরবাসী। মোবাইলের অর্ডার দিয়ে মিলেছে ইট। যদিও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যন্ত্রের বদলে তিন জোড়া জুতো কীভাবে ওই বাড়িতে পৌঁছল, তা নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। পুলিশ জানিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্তার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২৬ জুলাই তাঁর ছেলের মোবাইল থেকে তিনি অনলাইন বিপণিতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যন্ত্রের অর্ডার দেন। যন্ত্রটির দাম ৫৫ হাজার টাকা। তার সঙ্গে ৫৯ টাকা ডেলিভারি চার্জ। তিনি পুরো টাকা অনলাইনে জমা দেন। গত ৩ আগস্ট তাঁর রিজেন্ট এস্টেটের বাড়িতে আসে ডেলিভারি বয়। তাঁর কাছ থেকে ওটিপি চান তরুণ। প্যাকেটটি নেওয়ার সময়ই সন্দেহ হয় দীনেশবাবুর। ডেলিভারি বয়কে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এটি তাঁরই জিনিস। কিন্তু প্যাকেটটি খোলার পরই হতবাক দীনেশবাবু ও তাঁর পরিবার।
[আরও পড়ুন: লকডাউনেও বাড়তি ফি, বেসরকারি স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিতে কমিটি গড়ার নির্দেশ আদালতের]
অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যন্ত্রের বদলে প্যাকেটে তিন জোড়া বিভিন্ন মাপের জুতো। সঙ্গে সঙ্গেই অভিযোগকারীর ছেলে মেল করে অনলাইন বিপণিকে বিষয়টি জানান। সঙ্গে জুতোগুলির ছবিও পাঠানো হয়। বিষয়টি অনুসন্ধান করার জন্য বিপণি তাঁর ছেলের পরিচয়পত্রের কপিও চায়। সেটিও পাঠানো হয়। ৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় চায় অনলাইন বিপণি। অভিযোগে দীনেশবাবু জানিয়েছেন, এরপর থেকে তিনি বারবার ই-কমার্স সাইটের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোনও উত্তরই পাননি।
অবসর নেওয়ার পর থেকে তাঁর শরীরে একাধিকবার অস্ত্রোপচার হয়েছে দীনেশবাবুর। তাঁর শারীরিক অবস্থার জন্য অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যন্ত্রটির অত্যন্ত প্রয়োজন। তাঁর স্ত্রীও মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্টে ভোগেন। তাঁর জন্যও প্রয়োজন অক্সিজেন। বাড়ির কর্তার দাবি, অনলাইন সংস্থাটি প্রতারণার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে। কারণ, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যন্ত্রটি এখন তাঁদের না হলেই নয়। এই যন্ত্রটির জন্য আগাম ৫৫ হাজার ৫৯ টাকা দিয়েও কোনও কাজ হয়নি। সেই কারণেই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, অনলাইন বিপণির পাঠানো জুতোগুলি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সেগুলি নতুন। সংস্থার গুদামের বিভিন্ন জিনিস প্যাকেটে রাখা থাকে। এমনও হতে পারে, ট্যাগ লাগানোর সময় উলটোপালটা করে ফেলেছেন কর্মীরা। যদিও ইচ্ছাকৃতভাবে এই যন্ত্রটির বদলে প্যাকেটে জুতো পুরে দেওয়া হয়েছে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যন্ত্রটির দাম জুতোগুলির থেকে অনেক বেশি। এর পিছনে ডেলিভারি বয়ের কোনও হাত রয়েছে কি না, তা জানার জন্য তাঁর খোঁজ চলছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনলাইন শপিং সাইটটির সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘দিলীপের সঙ্গে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, জোট বেঁধেই লড়ব’, জল্পনা ওড়ালেন মুকুল]
The post ৫৫ হাজার টাকার অক্সিজেন যন্ত্র অর্ডার করে মিলল তিন জোড়া জুতো! পুলিশের দ্বারস্থ ক্রেতা appeared first on Sangbad Pratidin.