নব্যেন্দু হাজরা: বাসে উঠলে যানজটে আটকানোর ভয়। আর ট্যাক্সি বা ক্যাব ভাড়া করার সামর্থ্য অধিকাংশেরই নেই। তাহলে উপায়? ভরসা সেই শহরের লাইফলাইন। কোনও বিঘ্ন ছাড়াই ভিড় সামলে এবার পুজোয় ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ কলকাতা মেট্রো (Kolkata Metro)। শহরের উত্তরের প্যান্ডেলের সঙ্গে দক্ষিণকে একইসূত্রে বেধেছে শহরের পাতালপথ। ফলে এক রাতেই নলিন সরকার স্ট্রিট দেখা যুবতীও আরামে আবার কালীঘাটে নেমে ত্রিধারা সম্মিলনীর ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরতে পেরেছে।
ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট ঠিকঠাক হওয়ায় পঞ্চমী থেকে দশমীতে ৩৯ লক্ষ ২০ হাজার ৭৮৯ জন যাত্রী উঠেছেন মেট্রোতে। তার মধ্যে রয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর (East West Metro) ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৪২৮ জন। ২০১৯ সালে রেকর্ড তৃতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত পাতালপথে যাত্রী হয়েছিল ৬১.৬ লক্ষ। মেট্রোর হিসাবে ওটাই ছিল সর্বকালীন রেকর্ড। তার মধ্যে চতুর্থী থেকে নবমীতেই ৪৯.৫ লক্ষ যাত্রী মেট্রোয় চড়ে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে গিয়েছিলেন। আয় হয়েছিল পাঁচ কোটি টাকার কাছাকাছি। এবছরে পুজোর সময় এই ছ’দিনে মেট্রোয় টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ছ’কোটি টাকা। যা রেকর্ড। সপ্তমী থেকে নবমী এই তিনদিন সারারাত মেট্রো চলেছে।
[আরও পড়ুন: গার্ডেনরিচ কাণ্ড: আমিরের ১৫০০ অ্যাকাউন্টের হদিশ, আরও ২০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ]
মেট্রোয় প্রবল যাত্রীচাপে সব ঠিকঠাক থাকবে তো! কোনওভাবে বিগড়ে গেলে দর্শনার্থীদের যাতায়াতের মূল মাধ্যমই ভেঙে পড়বে না তো! এই আশঙ্কাতেই যে কোনও বিপর্যয় এড়াতে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন মেট্রো কর্তারা। আর তাতেই যাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দিল মেট্রো। গোটা রাত খোলা ছিল কন্ট্রোলরুম। প্রতি স্টেশনে অতিরিক্ত আরপিএফ (RPF), রেক রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত কর্মী, স্টেশনজুড়ে মেট্রো আধিকারিকরা এমনভাবে ভিড় সামাল দিয়েছেন, যে মেট্রো চলেছে নিজের গতিতেই। ফলে যাত্রীরাও মেট্রোয় চড়ে নিশ্চিন্তে ঠাকুর দেখেছেন। প্ল্যাটফর্ম বা ট্রেনের ভিতরে কখনওই ভিড় মাত্রা ছাড়ায়নি। তার উপর সব এসি রেক চলায় সুবিধাই হয়েছে যাত্রীদের। তাঁদের কথায়, সারাবছর যেমন তেমন হলেও পুজোয় ১০০-তে ১০০ পেয়েছে মেট্রো। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (Metro PRO) একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “এবছর পুজোর সময় আমাদের কর্মীরা খুব ভাল ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট করেছেন। কোনও সমস্যা হয়নি। সাধারণ মানুষ খুব দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্যত্র পৌঁছে গিয়েছেন।”
[আরও পড়ুন: উৎসবে বেপরোয়া নাগরিক! পাঁচদিনে প্রায় ৩৫ হাজার ট্রাফিক মামলা ঠুকল কলকাতা পুলিশ]
পাশাপাশি সড়ক পথেও অতিরিক্ত বাস নামিয়ে যাত্রীচাপ সামাল দিয়েছে পরিবহণ দপ্তরও। সারারাত সরকারি, বেসরকারি বাস চলেছে। যে কারণে সে অর্থে যাত্রীদের বেগ পেতে হয়নি। রাস্তাতে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টও খুব ভাল হওয়ায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছোতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি দর্শনার্থীদের।