নব্যেন্দু হাজরা: রেক নিয়ে যতই বিতর্ক থাক, পুজোতে যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে আরও দুই ‘বিতর্কিত’ মেধা রেক নামানোর পরিকল্পনা মেট্রো কর্তৃপক্ষের। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়ে গিয়েছে মেট্রো ভবনে। ঠিক হয়েছে, নতুন এই রেক রোজ ছোটার আগে আইসিএফ এবং মেধা সংস্থার কর্মীরা বারবার পরীক্ষা করে দেখবেন। তারপরই যাত্রী নিয়ে ছোটার ছাড়পত্র দেবেন।
[আরও পড়ুন: দু’মাস পর ধরা পড়ল গব্বর, স্বস্তিতে জোরজোনাকি গ্রামের মানুষ]
প্রথম ধাপে তিনটি মেধা রেক যাত্রী নিয়ে চলা শুরু করেছিল। তার মধ্যে একটির দরজায় হাত আটকে লাইনে পড়ে যাত্রীমৃত্যুর ঘটনা ঘটে পার্ক স্ট্রিট স্টেশনে। তখনই প্রশ্ন ওঠে, রেকের দরজার সেন্সর নিয়ে৷ দ্রুত পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য ওই রেকটি এবং বাকি দুটি রেকও বসিয়ে দেওয়া হয়। দেখা যায়, নতুন এই মেট্রোয় হাজারো ত্রুটি। দিন দুই বন্ধ রাখার পর দুটি রেক অবশ্য চালু করা হয়। আরও নতুন দু’টি রেক রয়েছে কারশেডে। সেগুলিই পুজোর আগে নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে মেট্রো ভবনে দীর্ঘক্ষণ বৈঠকও হয়। মেট্রোকর্তাদের বক্তব্য, রেকগুলিতে কিছু সমস্যা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা যাত্রী নিয়ে ছোটার যে অযোগ্য তা তো নয়। যে সমস্যা রয়েছে, তা শুধরে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই ট্রেন ফের যদি চলা শুরু করে ফের যাত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না তো! আধিকারিকদের দাবি, ট্রেন যেদিনই নামুক, সব দিক খতিয়ে দেখেই তা নামানো হবে।
বর্তমানে ১৩টি এসি এবং ১৪টি নন এসি রেক চলে। কিন্তু নন এসি গুলোর বেশিরভাগই চলার অযোগ্য। তবু বাধ্য হয়েই ট্রিপ ঠিক রাখতে সেই ট্রেনগুলিকেও ছোটানো হয়। পুজোতে মেট্রোয় রেকর্ড যাত্রী চড়েন। প্রবল ভিড় হয়। সেই সময় নন এসি ট্রেনগুলি চালানো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নতুন মেধা নামাতে চাইছে কর্তৃপক্ষ। যদিও তা নিয়ে মেট্রোর অন্দরেই কারও কারও ক্ষোভ রয়েছে। তাঁদের দাবি, রেকে প্রচুর সমস্যা রয়েছে। তাই এখানকার ইঞ্জিনিয়াররাই এই রেকের উপর ভরসা করছেন না। কলকাতা মেট্রোর ট্রেন এগজামিনার বা টিএক্সআরদের সবুজ সংকেত পায়নি মেধা। তবু আইসিএফে তৈরি করা এই রেক রেলবোর্ড কার্যত চাপিয়ে দিয়েছিল মেট্রোকে।
তিনটি ট্রেন দু’বছর ট্রায়াল রান করে যাওয়ার পর চলা শুরু করেছিল যাত্রী নিয়ে। একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। কারণ, কলকাতা মেট্রোয় রেকের আকাল। ত্রুটিমুক্ত না করেই যাত্রী নিয়ে ছুটছিল সে। আর সেই ত্রুটিপূর্ণ রেকই কাল হয়েছিল পার্ক স্ট্রিট স্টেশনে। সেন্সর কাজ না করাতেই দরজায় হাত আটকানো সত্ত্বেও কোনও সংকেত পাননি মোটরম্যান। ছোটানো শুরু করেছিলেন গাড়ি। তাতেই ঘটে দুর্ঘটনা। এখানকার ইঞ্জিনিয়াররা দেখেই বলেছিলেন, রেকে প্রচুর সমস্যা আছে। যে কারণে তাঁরা ছাড়পত্রই দেননি। তাই মেধার লোক রেখে ট্রেন চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাতেও এড়ানো যায়নি দুর্ঘটনা। তাই পুজোর রাতে কলকাতা মেট্রোয় এই রেক চললেও তাতে যাত্রীরা কতটা নিরাপদ থাকবেন, তা নিয়ে মেট্রোর অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
[আরও পড়ুন: শহরের অভিজাত আবাসনে পোশাক বিতর্ক, স্বল্পবাসের অভিযোগে হেনস্তা প্রেসিডেন্সির ছাত্রীকে]
The post পুজোয় যাত্রী চাপ সামলাতে কি ফের পাতালে নামবে আরও দুই ‘বিতর্কিত’ মেধা? appeared first on Sangbad Pratidin.