অর্ণব আইচ: ইংরাজি নতুন বছরের প্রথমেই কলকাতা থেকে উদ্ধার হল প্রচুর সংখ্যক বুলেট। লালবাজারের গোয়েন্দারা তল্লাশি চালিয়ে গার্ডেনরিচ থেকে উদ্ধার করলেন ৯০টি তাজা কার্তুজ। এই ঘটনায় শেখ মহম্মদ ইস্তাক নামে এক অস্ত্র পাচারকারী (arms dealer) -কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিহার থেকে এই বুলেটগুলি কলকাতায় নিয়ে আসা হয় বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা থানা এলাকার নস্করপাড়া রোড থেকে শঙ্কর মণ্ডল ওরফে কুটো বুড়ো নামে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ আধিকারিকরা। তার কাছ থেকে একটি রিভলভার আটক করা হয়েছে। ধৃত সেটি বিক্রি করার চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে অস্ত্র পাচার হওয়ার খবর লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকদের কাছে আসে। সেই মতো তাঁরা গার্ডেনরিচ (Garden Reach) এলাকায় হানা দেন। দিনো মিস্ত্রি বাগান ও পাহাড়পুর রোডের সংযোগস্থলে ওই ব্যক্তিকে একটি কালো রঙের ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। বুলেট ক্রেতার জন্য ওই কালো ব্যাগ ছিল পাচারকারীকে শনাক্তকরণের উপায়। ধৃতের কাছ থেকে যে ৮ এমএম বুলেট উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি মূলত মুঙ্গেরের মিস্ত্রিদের হাতে তৈরি পিস্তলে ব্যবহার করা হয়।। তবে এই বুলেট অনেকটাই শক্তিশালী ও দূর থেকেও এই গুলিতে মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। গোয়েন্দারা আরও জেনেছেন, মহম্মদ ইস্তাক নামে ওই অস্ত্র পাচারকারী মধ্য কলকাতার বউবাজার এলাকার ফিয়ার্স লেনের বাসিন্দা। একদিন আগেই সেনা গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে এন্টালি থেকে উদ্ধার হয়েছে ২২টি তাজা বোমা। এরপরই লালবাজারের গোয়েন্দারা বুলেটের সন্ধান পেলেন।
[আরও পড়ুন: কোভিড টেস্টে পাশ করলে তবেই গঙ্গাসাগরের ট্রেনে উঠতে পারবেন তীর্থযাত্রীরা]
গোয়েন্দাদের কথায়, অনেক সময় বিহারের মাওবাদীরা বিভিন্ন ধরনের বুলেট জোগাড় করে নিজেদের তহবিল বাড়াতে সেগুলি বিক্রি করে। বিহারের কিছু এজেন্ট রয়েছে, যারা মাওবাদীদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রেখে বুলেট জোগাড় করে। কারণ মুঙ্গেরের বেআইনি অস্ত্র তৈরির মিস্ত্রিরা বিভিন্ন ধরনের পিস্তল বা রিভলভার তৈরি করলেও বুলেট তৈরি করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। সেই কারণে এজেন্টরা বুলেট পাচারের উপরও জোর দেয়। আসলে এর প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। ইস্তাকের মতো অস্ত্র পাচারকারীরা বিহারের এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। সম্প্রতি বিহার থেকে বুলেটগুলি নিয়ে এসে সে নিজের বাড়িতে রেখেছিল। এদিন বন্দর এলাকার এক অস্ত্র পাচারকারীর হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল তার। নির্বাচনের আগে গোলমালের জন্য এই বুলেট আগে থেকে সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছিল, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। আবার অস্ত্রের সঙ্গে চোরাপথে বাংলাদেশেও পাচার হয় বুলেট। কলকাতার অস্ত্র পাচারকারী ও অস্ত্রের ক্রেতাদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।