অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: সস্তায় বিক্রি হচ্ছে নাবালিকা! তাও মাত্র ১০ হাজার টাকায়। বাংলাদেশ, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে তাঁদের নিয়ে আসা হচ্ছে। মাত্র দশ হাজার টাকায় পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কিশোরীদের। আর তাঁদের দিয়ে শহরে মধুচক্র চালানো হচ্ছে। গত তিনমাসে প্রায় চারজন নাবালিকাকে শহর থেকে উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিট। যার মধ্যে একজন বাংলাদেশী, একজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকা, আর একজন উত্তরবঙ্গের। এদেরকে পাচারকারীদের হাতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়ায় নাবালিকাদের বয়স ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। পরিবারের লোকজন মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের মেয়েদের দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছে।
শহর ও শহরতলিতে মানবপাচারের ঘটনা না হলেও প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে এখনও এই চক্র সক্রিয় রয়েছে। হতদরিদ্র পরিবারের কিশোরীদের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে কলকাতায় নিয়ে এসে যৌন ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে পাচারকারীরা। মূলত উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত লাগোয়া এলাকা বসিরহাট, বনগাঁ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন, ক্যানিং, কাকদ্বীপের মতো প্রত্যন্ত এলাকাগুলি পাচারকারীদের টার্গেট। উত্তরবঙ্গ সীমান্ত এলাকা থেকেও নাবালিকাদের নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গেও এ দেশের একটা বড় চক্র কাজ করছে। সেখান থেকে কিশোরীদের বিক্রি করে এখানে পাঠানো হচ্ছে। কলকাতায় কাজ দেওয়ার নাম করে তাঁদের নিয়ে আসা হচ্ছে। তবে এখন আর পাচার হয়ে আসা সব কিশোরীদের যৌনপল্লিতে বিক্রি করা হচ্ছে না। সাধারণত পাচার হয়ে আসা মহিলাদের জায়াগা হত সোনাগাছির মতো এলাকায়। তাই গোয়েন্দাদের নজর থাকত রেড লাইল এলাকাগুলিতে।
[আরও পড়ুন: জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার উল্লাসে মেগা ব়্যালি! ভিডিও ভাইরাল হতেই গ্যাংস্টার ফিরলেন শ্রীঘরে]
লালবাজার গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আগে পাচারকারীরা মেয়েদের নিয়ে এসে যৌনপল্লিতে বিক্রি করত। ফলে অভিযোগ এলে পাচার হয়ে আসা মেয়েদের উদ্ধারকাজ সুবিধা হত। এখন অবশ্য পাচারকারীরা কিশোরীদের যৌনপল্লিতে বিক্রি করছে না। তাঁদের অসাধু লোকজনের হাতে তুলে দিচ্ছে। তারা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ওইসব কিশোরীদের দিয়ে মধুচক্র ব্যবসা চালাচ্ছে। অভিযান চালিয়ে গত তিনমাসে প্রায় ১২জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, মানবপাচার রুখতে অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিট সক্রিয় রয়েছে। যে কারণে অনেক মেয়েদের উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাভাবিক জীবনেও ফিরে গিয়েছে।