অর্ণব আইচ: অফিসের মধ্যেই ক্রিকেট বেটিং। পার্ক স্ট্রিটের একটি বহুতলের অফিসে হানা দিয়ে চারজন ‘জুয়াড়ি’কে ধরলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ধৃতদের মধ্যে একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও বাকি তিনজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের অফিসের ভিতরেই অনলাইনে ক্রিকেট জুয়া চলছিল বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে চলছিল আইপিএল ম্যাচ। কেকেআর-এর ওই ম্যাচ চলাকালীন যে ক্রিকেট বেটিং হবে, সেই খবর আসে লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে। খবর পেয়ে পার্ক স্ট্রিটের ওই বহুতলে হানা দেন তাঁরা। দেখা যায়, টিভিতে খেলা দেখা হচ্ছে। তার সঙ্গেই মোবাইল ব্যবহার করে চলছে অনলাইন ক্রিকেট বেটিং। লালবাজারের দাবি, কলকাতায় বসে দেশের একাধিক শহরের জুয়ারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ‘বুকি’ হিসাবেও অনলাইনে বেটিং পরিচালনা করছিলেন, অভিযোগ এমনই।
[আরও পড়ুন: ‘ওঁকে মেরে ফেলা হতে পারে’, অনুব্রতর নিরাপত্তা নিয়ে এবার বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ]
ওই অফিস থেকেই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিষ্ণু বোয়ালকা, তিন ব্যবসায়ী বৈভব বিদ্যাসারিয়া, দুই ভাই পঙ্কজ বাগলা ও পীযূশ বাগলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অফিসের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় মোবাইল ফোন, ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ‘বোর্ডমানি’। রবিবার ধৃত চারজনকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাঁদের তিনদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। গোয়েন্দাদের দাবি, এর আগেও কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরা পড়েছে ক্রিকেট জুয়াড়িরা। বাগুইআটি থেকে ধরা পড়েছে ক্রিকেট বুকিও। এরপর থেকে আইপিএল ম্যাচ অথবা ওয়ান ডে ম্যাচের ক্ষেত্রে সতর্ক হন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
অনলাইনে ক্রিকেট জুয়া শুরুর পর থেকে ফোন করার বদলে সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে জুয়াড়ি ও বুকিরা। ক্রিকেট জুয়ার জন্য কয়েকটি বিশেষ অ্যাপও ব্যবহার করা হয়। শনিবার দুপুর থেকেইওই অ্যাপ ও কয়েকটি ওয়েবসাইটের উপর নজর রাখা হচ্ছিল। তাতেই দেখা যায় যে, কলকাতায় বসে পরিচালনা করা হচ্ছে ক্রিকেট জুয়া। কয়েকটি মোবাইলের নম্বর পেয়ে সেগুলির সূত্র ধরেই পার্ক স্ট্রিটের বহুতলের অফিসটিতে পৌঁছন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা। জুয়ার জন্য ওই বিপুল টাকা আগে থেকেই তুলে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ধৃতদের জেরা করে এই চক্রের বাকিদেরও সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।