বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: হাতে ইস্ত্রি। পায়ে জড়ানো তার। নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার কলকাতা পুলিশের কনস্টেবলের নিথর দেহ। ইস্ত্রি থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলেই অনুমান। তবে এক বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও নিজের স্বামীর মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত নন পুলিশকর্মীর স্ত্রী। এই ঘটনায় নদিয়ার শান্তিপুর থানার বাইগাছি ওস্তাগড়পাড়া লেনে শোকের ছায়া।
নিহত বছর ঊনপঞ্চাশের অভীক মিত্র, কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। ২০০২ সালে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ একুশ বছরের চাকরিজীবনে নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। স্ত্রী মৌমিতা মিত্র এবং যমজ পুত্রসন্তানদের নিয়ে সংসার তাঁর। সাপ্তাহিক ছুটিতে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। শুক্রবার পরিবারের সকলকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। নিহত পুলিশকর্মীর স্ত্রীর দাবি, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পরিচারিকা এসে ডাকেন। দরজা খুলে দেন। তখনও পুলিশকর্মী পাশের ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘুমোচ্ছিলেন।
[আরও পড়ুন: ‘বাগদার ‘রঞ্জন’ গ্রেপ্তার হয়ে আর কিছুই হবে না’, আক্ষেপ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
ছেলে ডাকতে যান তাঁকে। দরজা ধাক্কা দিয়েও সাড়া পাননি কেউ। এরপর দরজা ধাক্কা দিয়ে খোলা হয়। ঘরের ভিতরে ঢুকে কার্যত হতবাক সকলেই। তাঁরা দেখেন ঘরের মেঝেতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। হাতে ইস্ত্রি। পায়ে জড়ানো বিদ্যুতের তার। পায়ে একটি জায়গায় পোড়ার দাগও দেখা গিয়েছে। ওই দৃশ্য দেখার পর চিৎকার করতে শুরু করেন সকলে। প্রতিবেশীরাও দৌড়ে আসেন। পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ইস্ত্রি থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই পুলিশকর্মীর। নিহত পুলিশকর্মীর স্ত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী মিত্র আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁদের দুই ছেলে টিউশন পড়ে বাড়িতে ফেরে। দুই ছেলে এবং নিজে খাওয়াদাওয়া করে রাত ১১টা ১০মিনিট নাগাদ ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাঁর স্বামী গান শুনেছিলেন। ঠিক কখন তিনি নিজের জামা ইস্ত্রি করছিলেন, তা তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়। মর্মান্তিক এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন পুলিশকর্মীর পরিবারের প্রায় সকলেই। এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।