অর্ণব আইচ: এবার থেকে কেস ডায়েরি থাকবে পুলিশের হাতের মুঠোয়। প্রয়োজনে মোটা ফাইল বয়ে বেড়ানোর বদলে এবার মোবাইলেই রেখে দেওয়া যাবে পুরো কেস ডায়েরি। কেস ডায়েরি ডিজিটাল করার জন্য এবার নতুন অ্যাপ নিয়ে আসছে কলকাতা পুলিশ। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি থানার পুলিশ আধিকারিকরা এই অ্যাপটির ব্যবহার শুরু করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এখনও বহু ক্ষেত্রে পুলিশ (Police) ডিজিটালের বদলে কাগজের নথিই ব্যবহার করে। সেই তালিকায় রয়েছে মামলার কেস ডায়েরিও। এই ক্ষেত্রে মামলার তদন্তকারী আধিকারিককে যাবতীয় নথিপত্র সংগ্রহ করে তা ফাইলেই রাখতে হয়। প্রয়োজনমতো সেই ফাইল থেকেই কাগজপত্র বের করতে হয়। আবার আদালতে (Court) বিচারক কেস ডায়েরি দেখতে চাইলে পুরো ফাইলটিই তাঁর হাতে পুলিশ আধিকারিক তুলে দেন। কিন্তু এত কাগজপত্র একই ফাইলে থাকার ফলে পুলিশ আধিকারিকরা অনেক সময় সমস্যায়ও পড়েন। বিশেষ করে যখন অনেক দিন পর মামলার শুনানি শুরু হয়, অথবা কোনও মামলা ফের শুরু হলে আদালত সমন দিলে ওই কেস ডায়েরির ফাইল পুলিশ আধিকারিকদের আবশ্যিকভাবে নিয়ে যেতে হয়।
[আরও পড়ুন: সন্ত্রাসের কবলে রাশিয়া, একাধিক ধর্মীয় স্থানে হামলায় মৃত অন্তত ১৫]
কিন্তু কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ফাইল থেকে কোনওভাবে হারিয়ে গিয়েছে কোনও একটি নথি বা কাগজ। তখনই সমস্যা সৃষ্টি হয়। আবার কখনও বা দেখা যায়, তদন্তকারী আধিকারিক ফরেনসিক রিপোর্ট বা ঘটনাস্থল তথা ‘ক্রাইম সিন’-এর প্রত্যেকটি ছবি ফাইলে রাখতে ভুলে গিয়েছেন। সেই ক্ষেত্রেও মামলার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতেই এবার একটি বিশেষ ‘কেস ডায়েরি অ্যাপ’ তৈরি করছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: হজে মৃতের সংখ্যা ১৩০০ পার, ৮৩ শতাংশই বেআইনি পুণ্যার্থী! দাবি সৌদির]
ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। বেহালা অঞ্চলের কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকের মোবাইলে ডাউনলোড করা হয়েছে অ্যাপটি। এই অ্যাপে কেস ডায়েরি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আপলোড করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আপলোড হচ্ছে ফরেনসিক রিপোর্ট ও যাবতীয় ছবিও। প্রত্যেকটি মামলার জন্য এই অ্যাপে আলাদা আলাদা ফোল্ডার থাকছে। কোনও ঘটনা ঘটার পর তার তদন্ত শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ আধিকারিক শুরু থেকেই যাবতীয় নথিপত্র ওই অ্যাপে আপলোড করতে পারবেন। এমনকী, প্রয়োজনমতো ঘটনাস্থলের ছবি তুলেও তা ‘সেভ’করে রাখা যাবে ওই ফোল্ডারে। এর পর থেকে তদন্তের যা যা নথি পুলিশ আধিকারিক সংগ্রহ করবেন, তা তিনি সহজেই সেগুলি কেস ডায়েরি অ্যাপে সংগ্রহ করতে পারবেন। এই অ্যাপটি পরীক্ষায় পাস করলে তা প্রথমে বেহালা অঞ্চলের সব পুলিশ আধিকারিকের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে। ক্রমে ওই অ্যাপ কলকাতা পুলিশের অন্য আধিকারিকরা ব্যবহার করতে পারেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।