অর্ণব আইচ: মুম্বইয়ের ২৬/১১-এর পুনরাবৃত্তি হতে পারে কলকাতায়! নদীপথে তিলোত্তমায় হামলা চালাতে পারে জেহাদিরা। এ ধরনের জঙ্গি হামলা রুখতে আরও তৎপর কলকাতা পুলিশ। তার সঙ্গে বন্দরের নিরাপত্তা বৃদ্ধির উপরও রয়েছে পুলিশের নজর। সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিতে এবার গঙ্গায় নিজস্ব নতুন একটি জেটি তৈরি করল কলকাতা পুলিশ। এই জেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কলকাতা পুলিশ কমিশনারেট’ জেটি। বুধবার এই জেটির উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
পুলিশ জানিয়েছে, মুম্বই হামলার পর থেকেই কলকাতায় নদীপথে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। শুরু হয়েছে অতিরিক্ত নজরদারি। সাধারণত কলকাতার গঙ্গায় নজরদারির মূল দায়িত্ব বর্তায় জলপুলিশ বা কলকাতা পুলিশের ‘রিভার ট্রাফিক’এর উপর। তার জন্য আউট্রাম ঘাটের কাছে রয়েছে জলপুলিশের নিজস্ব একটি জেটি। প্রথমে টহল দিত জলপুলিশের লঞ্চ। ক্রমে টহলদার লঞ্চের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে গঙ্গায় টহল দিচ্ছে কলকাতা পুলিশের স্পিডবোট ও ওয়াটার স্কুটার। কিন্তু এতগুলি জলযানের জন্য জলপুলিশের দপ্তরের লাগোয়া জেটি ছাড়াও আরও একটি জেটি তৈরির পরিকল্পনা করে কলকাতা পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘এমএ ইংলিশ চাওয়ালি’র দোকান ভাঙল আরপিএফ, বিক্ষোভ তৃণমূলের]
লালবাজারের পক্ষ থেকে গঙ্গার ঘাটে সমীক্ষাও চালানো হয়। তাতে দেখা যায় যে, তক্তাঘাটের কাছে একটি জেটি অব্যবহৃত হয়ে রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষর কাছ থেকে ওই জেটি ব্যবহার করার জন্য অনুমতি নেয় কলকাতা পুলিশ। ওই জেটি সারিয়ে তুলে পুলিশ নিজের মতো তৈরি করে নেয়। এই জেটিতে দাঁড়াতে পারে দু’টি লঞ্চ অথবা একাধিক স্পিড বোট।
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মুম্বইয়ের আদলে কখনও জলপথে জঙ্গিরা কলকাতায় হামলা চালানোর ছক কষতে পারে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, বাংলাদেশ থেকে সুন্দরবন হয়ে জঙ্গিরা কলকাতায় দিকে পাড়ি দিতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। জঙ্গিরা যদি ছোট নৌকা করে গঙ্গা ধরে কলকাতার কোনও ঘাট বা বন্দরে এসে উঠে কাসভদের মতো স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে শুরু করে, তার ফল হবে মারাত্মক।
কলকাতাকে সুরক্ষিত রাখতে দক্ষিণ থেকে উত্তরের বরানগর পর্যন্ত দিন ও ও রাতে গঙ্গায় প্রত্যেকটি লঞ্চ ও মৎস্যজীবীদের নৌকার উপর নজর রাখতে হয় পুলিশকে। নজরদারির জন্য জলপুলিশের প্রয়োজন ছিল আরও একটি জেটির, যেখান থেকে দক্ষিণের বন্দর এলাকার উপর জলপথে নজরদারি সহজ হবে। এই নতুন জেটি থেকে সেই নজরদারি অনেকটাই সহজ হবে।
[আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উলটে মৃত্যু শিশুর, জখম কমপক্ষে ২৫]
এ ছাড়াও কোনও কারণে জলপুলিশের দপ্তরের জেটিতে কোনও সমস্যা তৈরি হলে তক্তাঘাটের এই জেটিটি প্রধান জেটি হিসাবেই ব্যবহার করা যেতে পারে। জলপুলিশের দপ্তরের পরিকাঠামো বৃদ্ধি করে নতুন করে অফিস তৈরি করা হয়েছে। আরও কিছু জলযান কেনার পরিকল্পনা চলছে। এদিকে, পুলিশের নতুন জেটিও আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। নতুন জেটি গঙ্গাপাড়ের আরও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।