গোবিন্দ রায়: কেন্দ্রের সঙ্গে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে মেদিনীপুরের বন্যা রুখতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ঘাটালের সাংসদ দেবকে সঙ্গে নিয়ে লোকসভা ভোটের আগে তা ঘোষণা করেছিলেন। এবার তা বাস্তবায়নের সময় এসেছে। দ্রুত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রিপোর্ট পেশ করল রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই রিপোর্ট দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, কীভাবে প্ল্যান বাস্তবায়িত হবে? তার কিছুই তো উল্লেখ করা নেই রিপোর্টে! ৬ সপ্তাহের মধ্যে ফের রিপোর্ট তলব করল ডিভিশন বেঞ্চ।
বর্ষার জলে ঘাটালের প্লাবন প্রতি বছরের ঘটনা। তা রুখতেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ভাবনা। দীর্ঘ পরিকল্পনায় বর্ষীয়ান রাজনীতিক মানস ভুঁইঞা এই প্রকল্পের কথা ভেবেছিলেন। এর বাস্তবায়নের জন্য ঘাটালের তিনবারের সাংসদ দেব সংসদে সওয়াল করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। ঘাটালবাসীর দুর্দশাও কাটেনি। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মিলে সিদ্ধান্ত নেন, এই পরিকল্পনা রাজ্য সরকারই বাস্তবায়িত করবে। তবে কাজে বেশ খানিকটা সময় লাগবে বলেও জানান তাঁরা।
কীভাবে তা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সম্প্রতি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্ট দেখে স্পষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। তিনি বলেন, "এই রিপোর্টে লেখা আছে যে বন্যার পর আপনারা কটা শাড়ি, বিছানার চাদর, লুঙ্গি, শিশু খাদ্য বিতরণ করেছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা কীভাবে করেছেন, সেটা লেখা আছে। কিন্তু মাস্টার প্ল্যান কীভাবে কার্যকর হবে বা কীভাবে এই বন্যা প্রতিরোধ করা হবে, সে বিষয়ে কিছুই লেখা নেই। আগামী বর্ষার আগে কিছু তো করুন। এখনই শুরু না করলে কিছুই করতে পারবেন না।''
প্রধান বিচারপতির আরও প্রশ্ন, "যন্ত্র কোথায় বসবে? কতজনকে পুনর্বাসন দিতে হবে? এলাকা দখলমুক্ত করতে হবে। এই সব তথ্য কোথায়? প্রতিকারের চেয়ে তো প্রতিরোধ ভালো।" ৬ সপ্তাহের মধ্যে ফের রাজ্যের রিপোর্ট তলব।