shono
Advertisement

পুজোর ভিড় সামলাতে নয়া ভাবনা কলকাতা পুলিশের, মণ্ডপের থিম অগ্রিম জানতে ‘গোয়েন্দাগিরি’!

ক্রাউড সার্কুলেশনে জোর দিচ্ছে পুলিশ।
Posted: 07:43 PM Aug 21, 2022Updated: 08:24 PM Aug 21, 2022

অর্ণব আইচ: পুজোর (Durga Puja) থিম মানেই ‘সারপ্রাইজ’। পুজোর থিম মানেই চমক। কিন্তু থিম ঘিরে যে ভিড় হয় মণ্ডপে। তাই আগাম থিম জানতে পারলে ‘ক্রাউড সার্কুলেশন’ তৈরির ক্ষেত্রে সুবিধা হয় পুলিশের। কিন্তু লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, আগাম ‘থিম’ জানা পুলিশের পক্ষেও খুব সহজ হয়ে ওঠে না। কারণ অনেক পুজো উদ্যোক্তাই থিম জানাতে চান না। যদিও পুলিশের দাবি, কাজের খাতিরেই রীতিমতো ‘গোয়েন্দাগিরি’ করেই জানতে হচ্ছে পুজোর থিম।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, পুজোর সময় ‘ক্রাউড সার্কুলেশন’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতেই কলকাতার কোন মণ্ডপে কত দর্শনার্থীর ভিড় হতে পারে, সেই সম্পর্কে তথ্য রয়েছে লালবাজারের কাছে। তবুও পুলিশের জানার প্রয়োজন হয় বড় পুজোগুলির থিম। কারণ, থিম দেখতেই অনেক সময়ই দর্শনার্থীরা ভিড় করেন সেই বিশেষ পুজো মণ্ডপগুলিতে। এর আগেও দেখা গিয়েছে, দেশপ্রিয় পার্কে ভিড়ের কারণে ‘সবথেকে বড় প্রতিমা’ দর্শন বন্ধ করে দিতে হয় পুলিশকে। গত বছর বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায়ও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল ‘বুর্জ খলিফা’ ঘিরে।

[আরও পড়ুন: ‘পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলব’, গেট খুলতে দেরি হওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীকে বিশ্রী গালি, কলার ধরে মার মহিলার]

পুলিশের এক কর্তা জানান, আগাম থিম জানা থাকলে পুরনো তথ্যের তুলনায় কোনও মণ্ডপে ভিড় বাড়বে কি না, সেই ‘হিসাব’ করতে সুবিধা হয়। সেইমতো বিশেষ মণ্ডপ ও তার আশপাশে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়। যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে যাতে অসুবিধা না হয়, সেই পরিকল্পনা করে ট্রাফিক পুলিশও। আবার কোন রাস্তা দিয়ে দর্শনার্থীরা মণ্ডপে প্রবেশ করবেন, কোন রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যাবেন, সেই ‘ক্রাউড সার্কুলেশন’এর পরিকল্পনাও করতে হয় পুলিশকে। সেই কারণেই সাধারণত লালবাজারের পক্ষে থানাগুলিকে বলা হয় নিজেদের এলাকার পুজোর থিম জানতে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, সম্ভবত ‘সারপ্রাইজ’ দেওয়ার জন্যই বেশিরভাগ পুজো উদে্যাক্তাই থিম প্রকাশ করছেন না। কিছু ক্ষেত্রে রীতিমতো ‘গোয়েন্দাগিরি’ করতে হচ্ছে থানার পুলিশ আধিকারিকদের। পরিচিত ক্লাব সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে থিম জানতে হচ্ছে পুলিশকে। সেই তথ্য থানার পক্ষে লালবাজারকে জানানো হচ্ছে। সেইমতো কত ভিড় কোন মণ্ডপে হতে পারে, সেই ধারণা করছেন লালবাজারের আধিকারিকরা।

এদিকে, ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু জানান, উদে্যাক্তারা সাধারণভাবে পুজোর দশ থেকে পনেরো দিন আগে থেকেই থিম জানাতে শুরু করেন। কিন্তু তার আগে হয়তো অনেকেই নিজেদের থিম বাইরে জানাতে চান না। শাশ্বতবাবুর দাবি, থিমের জন্যই যে সবসময় ভিড় হয়, তা বলা যাবে না। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বহু পুজো মণ্ডপ থিমের পুজো করে না। তবু সেই মণ্ডপগুলিতে ভিড় হয়। বালিগঞ্জ স্টেশনে নেমে লোকেরা পর পর যেতে থাকেন একডালিয়া, সিংহী পার্ক, বালিগঞ্জ কালচারে। এভাবে উত্তর ও মধ্য কলকাতায়ও দর্শনার্থীরা এভাবে ঠাকুর দেখতে বের হন। যাঁরা থিমের পুজো দেখতে ভালবাসেন, তাঁরা ঠিক করে নেন, কোন পুজোর মণ্ডপসজ্জা আর কোন মণ্ডপের প্রতিমা অথবা আলোকসজ্জা দেখবেন। তাই প্রত্যেক বছর পুজোর সময় কলকাতার যে অঞ্চলে যেরকম ভিড় হয়, সেই অঞ্চলে অন্তত সেরকমই ভিড় হবে, সেই আন্দাজ করা যায়। সেভাবে পুলিশের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

[আরও পড়ুন: ‘আত্মসম্মানের সঙ্গে আপস নয়’, গুলাম নবি আজাদের পর কংগ্রেসের পদ ছাড়লেন আনন্দ শর্মাও]

পুলিশ জানিয়েছে, দু’বছর পর করোনার বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ার কারণে এবার পুজোর সময় দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মাসের শেষ থেকেই প্রত্যেকটি থানার আধিকারিকরা তাঁদের নিজেদের এলাকার পুজো উদে্যাক্তাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করবেন। পুলিশও পুজো উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সুবিধা, অসুবিধার কথা শুনে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবে। ক্রমে ডিভিশনের ডিসি ও পুলিশ কমিশনারও পুজো উদে্যাক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement