অর্ণব আইচ: ফের শহর কলকাতায় উদ্ধার ইয়াবা৷ গ্রেপ্তার দুই মাদক পাচারকারী৷ ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার প্রায় ১০ লক্ষ ইয়াবা ট্যাবলেট৷ যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা৷ ধৃতদের জেরা করে চক্রের বাকিদের সন্ধান চালানো হচ্ছে৷
[আরও পড়ুন: ‘গুগল’ সার্চ ইঞ্জিনে লুকিয়ে জালিয়াতির ফাঁদ, তথ্য জেনে লুঠ দেদার টাকা]
পুলিশ সূত্রে খবর, আগেই গ্রেপ্তার হওয়া এক ব্যক্তিকে জেরা করে শহরে চলা মাদকচক্রের হদিশ মেলে৷ বেশ কিছুদিন রেকি করে বুধবার সল্টলেকে বড়সড় ‘ডিল’ হওয়ার কথা জানতে পারেন গোয়েন্দারা৷ সেইমতো ওইদিন ইএম বাইপাসের ধারে সল্টলেক স্টেডিয়ামের আশেপাশে ফাঁদ পাতে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)৷ বেলা ২.৪০ নাগাদ সেখানে দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ ধৃতদের কাছ থেকে ১০ লক্ষ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে৷ প্রায় ১০ কেজি ওজনের ওই মাদকগুলির বাজার দর প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা৷ ধৃত মাদক পাচারকারীদের নাম- মহিবুর রহমান, আসাবুর রহমান৷ দু’জনেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা৷
কয়েকদিন আগেই করিবুল শেখ নামের এক পাচারকারীর জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে কামাল হাসান নামের এক মাদক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ৷ আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে বাংলাদেশ ও মায়ানমার যোগ৷ ওই দুই দেশ থেকেই ইয়াবা ভারতে নিয়ে আসে পাচারকারীর৷ লালবাজার সূত্রে খবর, শহরের প্রায় সর্বত্রই রমরমিয়ে চলছে নিষিদ্ধ মাদকের কারবার। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকী স্কুল পড়ুয়াদের টার্গেট করেছে মাদক কারবারীরা। দিন কয়েক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাদের চাঙ্গা রাখার জন্য হিটলারের তৈরি করা উত্তেজক ট্যাবলেট রোহিঙ্গাদের হাত ধরে ঢুকছিল পশ্চিমবঙ্গে। আগে অন্য নামে এই ট্যাবলেট বিক্রি হলেও এখন মায়ানমারে দেদার তৈরি হচ্ছে ‘ইয়াবা’ পরিচয়ে। বার্মিজ সেনার তাড়া খেয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে থাকা রোহিঙ্গারা ব্যাগ ভর্তি করে এই উত্তেজক মাদক ট্যাবলেট নিয়ে ঢুকে পড়ছিল বাংলাদেশ এবং ভারতে। যারা বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে তারা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিচ্ছে।
কিন্তু যারা মণিপুরের মতো সীমান্ত দিয়ে গোপনে ঢুকছে তারা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে জনতার মধ্যে মিশে যাচ্ছে। যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীর চনমনে রাখতে এই ইয়াবা ট্যাবলেট কলকাতায় উচ্চবিত্তদের বখাটে সন্তানসন্ততিদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। বস্তুত এই কারণে কলকাতায় ইয়াবা চক্রের সন্ধানে বিস্তারিত তল্লাশি শুরু করেছে। উল্লেখ্য, মিষ্টি গন্ধ ও নজরকাড়া উজ্জ্বল রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট বিভিন্ন ফ্লেভারে পাওয়া যায়।
[আরও পড়ুন: অদম্য সাহসিকতাকে কুর্নিশ, বীরচক্র সম্মান পাচ্ছেন অভিনন্দন বর্তমান]