অর্ণব আইচ: বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার খাস কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে তিন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। আর তাদের জেরা করে একাধিক সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এরা জামাত-উল-মুজাহিদিন (JMB terrorist)বা অন্য কোনও জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলে সন্দেহ পুলিশের। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই কলকাতায় পালিয়ে এসেছিল। কলকাতার অদূরে নরেন্দ্রপুরে ডেরা বেঁধেছিল তারা। বাইপাস হয়ে গাড়ি করেই যাতায়াত করত বিভিন্ন জায়গায়। এই খবরের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়েই সন্দেহভাজন চারজনকে গ্রেপ্তার করে আনন্দপুর থানার পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজনই অনুপ্রবেশকারী।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, তিনজনের মধ্যে এক বাংলাদেশি গত সাত বছর ধরে ভুয়ো পরিচয়ে নদিয়া (Nadia) জেলায় রয়েছে। সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে নদিয়া জেলা হয়ে এ রাজ্যে ঢুকেছে আরও দুই বাংলাদেশি। এদের সঙ্গে জামাত-উল-মুজাহিদিন বা অন্য কোনও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের কোনও যোগাযোগ রয়েছে, এমন সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। এর আগেও আনন্দপুরে (Anandapur) বাংলাদেশিদের চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরির একটি চক্র ধরা পড়েছিল। ফলে চাকরি দেওয়ার নাম করে চক্রটি দুই বাংলাদেশি যুবককে কলকাতায় নিয়ে এসেছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে। এই ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হতে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা তাদের জেরা করছেন।
[আরও পড়ুন: খাবার চাইলে শরীর দাও! সেনা নির্যাতনে ‘নরক দর্শন’ সুদানের মহিলাদের]
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজবাড়ি জেলার পানসা থানা এলাকার কসবা মাজার গ্রামের মিজান শেখ, ওই এলাকারই কলি মোহর গ্রামের রুবেল শেখ, নদিয়ার নাকাশিপাড়ার সবুজ কুণ্ডু ও বাংলাদেশের পাবনা জেলার হেমাইতপুরের রাহুল শেখ। ২০১৭ সালে রাহুল চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে নদিয়ায় এসে নাকাশিপাড়ায় থাকতে শুরু করে। ভুয়ো পরিচয়পত্রও তৈরি করে সে। এর পর রাহুল বাংলাদেশি যুবকদের চাকরি দেওয়ার নাম করে পাচার করে নিয়ে আসত বলে সন্দেহ পুলিশের। লালবাজারের গোয়েন্দাদের মতে, এই পদ্ধতিতে জেএমবি-সহ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের পাচার করে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে আসা হয়। তাই এই চক্রটির সঙ্গে জঙ্গিদের যোগ রয়েছে কি না, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।
[আরও পড়ুন: মাও নেতা অর্ণব কি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পিএইডির ক্লাস করতে পারবেন? কারা দপ্তরের চিঠিতে জটিলতা]
দিন কয়েক আগে পুলিশ জানতে পারে, নদিয়ার নাকাশিপাড়ার অরিজিৎ দাস নামে এক ব্যক্তি নরেন্দ্রপুরের (Narendrapur) জাগতিপোতার দীপক মাঝির কাছ থেকে বাড়ি ভাড়া নেয়। দীপকই তাদের নরেন্দ্রপুরের সুকান্তপাড়ায় একটি বাড়ি ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেন। যদিও এই গ্রেপ্তারির পর থেকে অরিজিৎ পলাতক। ওই গাড়ি করে বাংলাদেশিরা কোথা থেকে নরেন্দ্রপুরের দিকে যাচ্ছিল, কেনই বা তারা কলকাতার উপকণ্ঠে এসে থাকছিল, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।