অর্ণব আইচ: অবসরগ্রহণ করেছে খুশি ও তার পাঁচ সঙ্গী। শূন্যপদের সংখ্যা ১১। তাই এবার ডগ স্কোয়াডের জন্য ১১টি নতুন সারমেয় শাবক কিনতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। তার জন্য বিজ্ঞাপনও দিয়েছে লালবাজার। পুলিশ সাহায্য নিয়েছে সোশাল মিডিয়ারও। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের আটটি সারমেয়র বয়স আট বা আটের কাছাকাছি। সাধারণত এক থেকে দেড় বছর বয়সে ‘পুলিশের চাকরি’তে যোগ দিয়ে আট বছরের পর অবসরগ্রহণ করে ডগ স্কোয়াডের সারমেয়রা। সেইমতো আটটি কুকুরকে অবসরগ্রহণের জন্য বেছে নেন পুলিশ আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, পশু চিকিৎসকদের বিশেষ বোর্ড বসিয়ে তাদের পরীক্ষা করা হয়। কতটা কর্মক্ষম দেখে নেন বিশেষজ্ঞরা। এর পরই খুশি-সহ ল্যাবরাডর প্রজাতির ৬টি কুকুর অবসর গ্রহণ করে। তবে সিজার ও রানি নামে দুটি সারমেয় এখনও কর্মক্ষম বলে পুলিশকে জানান বিশেষজ্ঞরা। তাই আটটির মধ্যে এই দুই সারমেয় এখনও ‘চাকরি’করবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দেন। আগে পাঁচটি ও অক্টোবরেই ছয়টি সারমেয় কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police ) ডগ স্কোয়াড থেকে অবসর গ্রহণ করার ফলে ১১টি পদ খালি হয়ে যায়। এবার এই ১১টি পদে একসঙ্গে নিয়োগের জন্যই ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
[আরও পড়ুন: রেড রোডের কার্নিভ্যালে মুগ্ধ ইউনেস্কো, বর্ণাঢ্য আয়োজনের রিপোর্ট গেল জেনিভায়]
গত শীতকালে চণ্ডীগড়ে গিয়ে কয়েকটি শাবক কিনে এনেছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। এবার অন্য ব্রিডারদের কাছ থেকেই পুলিশ কুকুর শাবক কিনতে চায়। এবিষয়ে লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, তাঁদের মূল পছন্দ ল্যাবরাডর ও জার্মান শেফার্ড। তবে ভালো প্রজাতির ডোবারম্যান পেলেও কিনতে পারে পুলিশ। কুকুরের বয়স হতে হবে ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে। ব্রিডাররা আগে অন্য বাহিনীতে কুকুর সরবরাহ করলে তাঁকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে শর্ত দেওয়া হয়েছে, ৬ মাসের মধ্যে কোনও শাবকের মৃত্যু হলে সেই জায়গায় অন্য শাবক দিতে হবে পুলিশকে। এক একটি ল্যাবরাডর শাবকের জন্য ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে রাজি পুলিশকর্তারা। জার্মান শেফার্ড তাঁরা কিনতে পারেন ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে। তবে এখনই বেলজিয়ান ম্যালিনয়িস কিনতে চায় না পুলিশ।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় এবার স্পেস মিউজিয়াম, সংগ্রহশালার উদ্বোধন করলেন রাকেশ শর্মা]
নবান্নের নিজস্ব ডগ স্কোয়াডের জন্য পরবর্তীকালে এই বিশেষ প্রজাতির কুকুর কিনতে পারে লালবাজার। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, “প্রথমেই দেখা হয় কুকুরের পেডিগ্রি। তার মা-বাবা ও পূর্বপুরুষের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়। তার পর নতুন কুকুর শাবক দেখে বোঝার চেষ্টা হয়, ভবিষ্যতে সেটি পুরোদস্তুর গোয়েন্দা কুকুর হয়ে উঠতে পারবে কি না। তার জন্য প্রথমেই শাবকটির দেহের গঠন, হাড় পরীক্ষা করা হয়। এর পর তাকে কোনও রবারের বস্তু দিয়ে দেখা হয়, সে কতটা জোরে চিবাতে পারে। সঙ্গে তার চলাফেরাও দেখে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে এ-ও পরীক্ষা করা হয় যে, শাবকটি কতটা বুদ্ধিমান ও তৎপর। সে কতটা মিশুকে বা মিশতে পারে, তা-ও বুঝে নেওয়া হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে সারমেয় শাবকটি কতটা আগ্রাসী বা কত জোরে ডাকতে পারে, তা-ও দেখা হয়।” এই বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়ার পরি এই ১১টি শাবক কিনে বাছাই করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।