অভিরূপ দাস: গিয়েছিলেন ট্রেকিং করতে। ফিরলেন ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে। উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিং করতে গিয়ে অভিযাত্রী দলের এক যুবকের হাতেই শারীরিক নিগ্রহের শিকার এসএসকেএম হাসপাতালের নার্স। তরুণীর অভিযোগ, নির্মাল্য সেনগুপ্ত নামে এক যুবক শারীরিক নিগ্রহ করেছে তাঁকে। বাধা দিতে গেলে তরুণীর চোখে আঘাত করে নির্মাল্য। তাঁর চোখের আঘাত গুরুতর। আপাতত এসএসকেএম হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে ওই নার্সের।
এই ঘটনায় দক্ষিণ কলকাতার সার্ভে পার্ক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণী। ৩৫৪ (শ্লীলতাহানি), ৩২৩ (মারধর) এবং ৫০৬ (ভয় দেখানো) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে যুবকের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নির্মাল্য। তাঁর দাবি, কোনও রকম নিগ্রহ করিনি। দুর্ঘটনাবশত চোখে আঘাত লেগেছে ওই তরুণীর।
[আরও পড়ুন: তালিবানি তাণ্ডবের মাঝেই খাস কলকাতায় উদ্ধার প্রচুর আফগানি মুদ্রা, ধৃত দুই আফগান নাগরিক]
জানা গিয়েছে, গত ১৪ আগস্ট আঠারো জনের ‘টিম’ নিয়ে উত্তরাখণ্ড ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন এসএসকেএমের ওই নার্স। ট্রেকিং এর তালিকায় ছিল ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স, হেমকুন্ড সাহিব, যোশীমঠ। তরুণীর অভিযোগ, ২০ আগস্ট রাত ১১টায় যোশীমঠে থাকাকালীন ওই যুবক তাঁকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করে। তাঁর কথায়, “এই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই ঘণ্টা দুয়েক পরে আমার উপর চড়াও হয় নির্মাল্য। এবং আমার চোখ ফাটিয়ে দেয়।” এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে আহত হন সায়ন্তন নামে অভিযাত্রী টিমের অন্য এক যুবকও। চোখের আঘাতের জন্য অর্বাইটাল সিটি স্ক্যান করিয়েছেন তরুণী। জখম চোখের অবস্থা সংকটজনক। তরুণী জানিয়েছেন, আমার চোয়ালে অসম্ভব ব্যথা। আংশিকভাবে দেখতে পাচ্ছি না। সঠিক বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। যতক্ষণ না ওই যুবকের উপযুক্ত শাস্তি হচ্ছে ততক্ষণ হাল ছাড়বো না।
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতিতে চিঠি দিয়েছেন নির্মাল্যও। তাঁর দাবি, “একা ট্রেকিংয়ে যাইনি। আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী মলি রাজবংশীও গিয়েছিল। ছিল ওই তরুণীর বয়ফ্রেন্ড সায়ন্তন ভট্টাচার্যও।” নির্মাল্যর কথায়, “যে রাতের কথা বলা হচ্ছে সেই রাতে দিশা এবং সায়ন্তনের মধ্যে প্রচন্ড বাগবিতণ্ডা চলছিল। ঝগড়া থামাতে গেলে আমার স্ত্রীকে সায়ন্তন জানায়, আমি নাকি ওই তরুণীর শ্লীলতাহানি করেছি। এমন কথা শুনে আমি মেজাজ হারিয়ে ফেলি। সায়ন্তন আর আমার মধ্যে শারীরিক ধাক্কাধাক্কি হচ্ছিল। পেশায় নার্স ওই তরুণী মাঝখানে এসে আমাদের ছাড়াতে চেষ্টা করে তখনই অনিচ্ছাকৃতভাবে আমার হাত ওর চোখে লেগে গিয়েছে।” যদিও যুবকের এই দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারী। তিনি জানিয়েছেন, “ট্রেকিং টিমের সদস্যদের মিথ্যে কথা বলে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে নির্মাল্য। ও যতই প্রভাব খাটাক আইনের প্রতি আমার সম্পূর্ণ ভরসা রয়েছে। আমার সঙ্গে ও যেটা করেছে তার শাস্তি পাবেই।”