shono
Advertisement

Breaking News

Kolkata Tram

শেষ হচ্ছে না ট্রাম-যুগ, থেকে যাবে ঐতিহ্য সফর

কলকাতা পুলিশ ট্রাম চালানো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 11:09 AM Sep 26, 2024Updated: 01:35 PM Sep 26, 2024

স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতার রাস্তায় ট্রাম বন্ধের খবর ঘিরে গত দুদিন ধরে তোলপাড় সোশ‌াল মিডিয়া। ট্রাম বাঁচানোর দাবিতে সরব গত দশ বছরে ট্রামে না চড়া মানুষও। অনেকে তো ট্রাম বন্ধ হয়ে গিয়েছে এমন কথাও রটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আদৌ কি ট্রাম বন্ধ হয়ে গিয়েছে! না! বুধবারও শ‌্যামবাজার-ধর্মতলা এবং গড়িয়াহাট-এসপ্ল‌্যানেড রুটে ট্রাম ছুটেছে ঘন্টি বাজিয়েই। আর সরকারও পুরোপুরি ট্রাম বন্ধের কথা ঘোষণা করেনি। জানিয়েছে, হেরিটেজ হিসাবে ট্রাম থাকবে। বাকিটা আদালতের রায় দেখে সিদ্ধান্ত হবে।

Advertisement

এনিয়ে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকার পুরো ট্রাম তুলে দিতে চাইছে না। হেরিটেজ হিসাবে ট্রাম থাকছে। আদালত কী রায় দেয়, আমরা সেদিকে তাকিয়ে রয়েছি।’’কলকাতার রাস্তায় ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে আদালতে মামলা হয়েছে। ট্রামপ্রেমী সংগঠনও ট্রাম ফেরানোর দাবিতে সরব। তবে আপাতত গোটা বিষয়টি বিচারাধীন। রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে তাদের মতামত। সেখানে কলকাতা পুলিশ, পুরসভা এবং পরের দিকে রাজ্য পরিবহণ নিগম ট্রাম চালানো নিয়ে তাদের নানা অসুবিধার কথা বলেছে। সরকারের ওই ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ বা অবস্থানের কথা রাজ্য আদালতে জানিয়েছে।

পরিবহণ দপ্তর জানাচ্ছে, ট্রামের ঐতিহ্যের বিষয়ে তারাও ওয়াকিবহাল। কিন্তু কলকাতা পুলিশ ট্রাম চালানো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। কারণ, যানজট এবং দুর্ঘটনা। যানজটমুক্ত শহর হিসাবে কলকাতা দেশের মধ্যে এক নম্বরে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকতে হয় না এখানে। ধীর গতির ট্রামের যাত্রীকে নামতে হয় রাস্তার মাঝখানে। যাতে বাড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও। তা ছাড়া ট্রামের লাইনে বাইকের চাকা স্কিড করেও বহু দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষত বৃষ্টির সময় এই ঘটনা বাড়ে। আর তাই ট্রাম লাইন তুলে ফেলার পক্ষেই সওয়াল করেছে পুলিশ এবং প্রশাসনের একাংশ। এখানকার জনঘনত্বও একটা ব‌্যাপার। গত কয়েকবছরে জনসংখ্যা ও তার সাথে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু রাস্তা চওড়া হয়নি। কলকাতায় মাত্র ৬ শতাংশ জমি রাস্তা মানে যান চলাচলের জন‌্য বরাদ্দ।

দিল্লিতে যা ১৮ এবং মুম্বইতে ১০ শতাংশ। পশ্চিমের দেশগুলোর যেখানে ট্রাম চলে, সেখানকার আর্থিক কাঠামো, জনঘনত্ব, রাস্তার জন্য বরাদ্দ জমি-ইত্যাদির সাথে ঘন বসতিপূর্ণ কলকাতার কোনও তুলনাই চলে না। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, ট্রাম পরিবেশবান্ধব ঠিকই কিন্তু কলকাতায় বিকল্প দ্রুতগতি সম্পন্ন পরিবেশবান্ধব যানবাহন চলে এসেছে। মেট্রো পরিবেশবান্ধব। তা ছাড়া এই রাজ্যে ১ লক্ষের উপর সরকারি ও বেসরকারি পরিবেশবান্ধব গাড়ি চলে। যা দেশের অন্য শহরে নেই। বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে ট্যাক্সেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

এক আধিকারিকের কথায়, ট্রাম নিয়ে আবেগ এই শহরের আছে। কিন্তু সরকারকে নানা দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ট্রাম লাইনের ফলে দুর্ঘটনা, যানজটের কারণে মন খারাপ নিয়েও ট্রামকে সরাতে হবে। হেরিটেজ আকারে ট্রাম থাকবে শুধু এসপ্ল‌্যানেড থেকে ময়দান পর্যন্ত। তবে এই ট্রাম চলা-না-চলা ঘিরেই এখন সোশ‌াল মিডিয়ায় কার্যত ঝড় উঠেছে। কেউ যেমন সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। অনেকেই আবার ট্রামের এই পরিণতির জন‌্য দায়ী করছেন আগের বাম সরকারকে।

অভিযোগ, পরিবহণ দপ্তরে অপ্রয়োজনীয় লোক ঢুকিয়ে কার্যত সিটুর ইউনিয়ন অফিসে পরিণত করে সিটিসি-কে পঙ্গু করার দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে সিপিএম। তারও আগে কংগ্রেস সরকারের আমলে এক পয়সা ভাড়াবৃদ্ধি ঘিরে ট্রাম পুড়তে দেখেছিল মহানগর। আবারও সেই ট্রাম নিয়েই আন্দোলন। ট্রাম বাঁচানোর দাবিতে আজ, বৃহস্পতিবার শ‌্যামবাজারে জমায়েতের ডাক দিয়েছে ট্রামপ্রেমী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বেলা ১২টায় জমায়েত। সেখানে ট্রাম-প্রেমীদের আসার ডাক দেওয়া হয়েছে সংগঠনের তরফে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কলকাতার রাস্তায় ট্রাম বন্ধের খবর ঘিরে গত দুদিন ধরে তোলপাড় সোশ‌াল মিডিয়া।
  • বুধবারও শ‌্যামবাজার-ধর্মতলা এবং গড়িয়াহাট-এসপ্ল‌্যানেড রুটে ট্রাম ছুটেছে ঘন্টি বাজিয়েই।
  • কলকাতা পুলিশ, পুরসভা এবং পরের দিকে রাজ্য পরিবহণ নিগম ট্রাম চালানো নিয়ে তাদের নানা অসুবিধার কথা বলেছে।
Advertisement