অর্ণব আইচ: ধোসার সঙ্গে মাদক মিশিয়ে এক যুবতীকে ধর্ষণ (Rape)। তার পর কলকাতায় পালিয়ে এসে যুবতীকে শুরু ব্ল্যাকমেল। দক্ষিণ শহরতলির ঠাকুরপুকুরে গা ঢাকা দিয়েও রক্ষা হল না অভিযুক্তর। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে দিল্লি পুলিশের (Delhi Police) যৌথ তল্লাশিতে গ্রেপ্তার হল শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই যুবক।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা (Kolkata) থেকে দিল্লিতে চাকরি করতে গিয়েছিল ওই অভিযুক্ত যুবক। সেখানেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় দিল্লির বাসিন্দা যুবতীর সঙ্গে। প্রথমে অনলাইনেই যোগাযোগ রাখতেন সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) দুই ‘বন্ধু’। ক্রমে নিজেদের মধ্যে মোবাইল নম্বরের আদানপ্রদান হয়। মোবাইলে কথা বলার পর দু’জন মধ্য দিল্লির একাধিক জায়গায় দেখা করেন। ওই যুবতীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত মাসের শেষের দিকেই তাঁকে মধ্য দিল্লির পাহাড়গঞ্জ এলাকায় ডেকে পাঠায় শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। যুবতীকে নিয়ে একটি হোটেলে যায় সে। তাঁকে হোটেলের রিসেপশনে বসতে বলে যুবক। বেশ কিছুক্ষণ পর বাইরে থেকে ঘুরে আসে সে। যুবতীকে বলে হোটেলের একটি ঘরে যেতে। এতে একটু অবাকই হন যুবতী। তবু শান্তনু তাঁকে বলে, হোটেলের ঘরের ভিতরেই খাওয়াদাওয়া করা যেতে পারে। তিনি ‘বন্ধু’র কথায় রাজি হয়ে যান।
[আরও পড়ুন: দুয়ারে অশান্তি? ‘দিদিকে বলো’র আদলে নতুন প্রকল্প রাজ্যে, খবর দিলে পুরস্কৃত করবেন মুখ্যমন্ত্রী]
হোটেলের ঘরের ভিতর যাওয়ার পর ধোসার অর্ডার দেয় শান্তনু। যুবতীর অভিযোগ, ওই ধোসা খাওয়ার পর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। ক্রমে তিনি প্রায় অচেতন হয়ে পড়েন। সেই সুযোগেই শান্তনু যুবতীকে ধর্ষণ করে। তাঁর চেতনা ফিরে আসার পর যখন পুরো ব্যাপারটি বুঝতে পেরে তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন। তখন শান্তনু তাঁকে সান্ত্বনা দেয়। এর পর থেকে শান্তনু তাঁকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। বরং জানিয়ে দেয়, তাঁর অশ্লীল ছবি তুলে রেখেছে সে। কাউকে তার কুকীর্তির কথা জানালে সে ওই ছবি ও ভিডিও ফাঁস করে দেবে।
এর মধ্যেই যুবতী রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেই বেগতিক বুঝে সে দিল্লি থেকে কলকাতায় পালিয়ে আসে। কলকাতায় বসেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সে যুবতীকে হুমকি দিতে থাকে। অশ্লীল ছবি ও ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার হুমকি দিয়ে ক্রমাগত ব্ল্যাকমেল করতে থাকে বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত যুবতী মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে দিল্লির পাহাড়গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পাহাড়গঞ্জ থানার পুলিশ অভিযুক্ত শান্তনুর মোবাইলের সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানতে পারে, দক্ষিণ শহরতলির ঠাকুরপুকুরের ডায়মন্ড হারবার রোডে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে সে। শনিবার দিল্লি পুলিশের একটি টিম কলকাতায় এসে ঠাকুরপুকুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। রাতে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে তল্লাশি চালান পাহাড়গঞ্জ থানার আধিকারিকরা। বাড়ি থেকেই শান্তনুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতের অনুমতি নিয়েই দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।