shono
Advertisement

যোগ-দুনিয়ায় ১৫০০ কোটির ব্যবসাযোগ

সল্টলেক তথ্যপ্রযুক্তি পার্কগুলি থেকে ডালহৌসির অফিসপাড়া৷ ছবিটা আতঙ্কের৷ এবং ক্রমবর্ধমান৷ সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা দিল্লি, মুম্বই, হরিয়ানা, গুরগাঁও অথবা পুণের সঙ্গে কলকাতাকে একই বিন্দুতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এই বিষয়টি৷ তবে এই অন্ধকারের মধ্যে আলোর দিকটি হল, এই সব শহরকে একই সরলরেখায় জুড়ে দিয়েছে আরও একটি বিষয়৷ তা হল যোগ৷
Posted: 09:57 PM Jun 21, 2016Updated: 05:05 PM Jun 21, 2016

তরুণকান্তি দাস: সকাল আটটার মধ্যে আঙুলের ছাপ ফেলতেই হবে৷ নাকে-মুখে গুঁজে দৌড়৷ রাস্তায় সামান্য জ্যাম হলেই টেনশনের চূড়ান্ত৷ একটুতেই মাইগ্রেন৷

Advertisement

আগে ছিল ইয়ারলি টার্গেট৷ প্রতিযোগিতার মুখে দাঁড়িয়ে এখন লক্ষ্য, মাসের কোটা পূরণ৷ রাতে বাড়ি ফিরেও থামা নেই৷ কাল কী হবে তা ভেবে মাথাব্যথা৷ সেলসের চাকরি বলে কথা৷ সকালে অফিসে ঢুকে সেই যে কম্পিউটরের মনিটরে চোখ রাখা, আঙুলের খেলা কি-বোর্ডে, বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামলে তবেই থামা৷ ঘাড়ে ব্যথা৷ আঙুলের সাড় কমছে ক্রমশ৷

সল্টলেক তথ্যপ্রযুক্তি পার্কগুলি থেকে ডালহৌসির অফিসপাড়া৷ ছবিটা আতঙ্কের৷ এবং ক্রমবর্ধমান৷ সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা দিল্লি, মুম্বই, হরিয়ানা, গুরগাঁও অথবা পুণের সঙ্গে কলকাতাকে একই বিন্দুতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এই বিষয়টি৷ তবে এই অন্ধকারের মধ্যে আলোর দিকটি হল, এই সব শহরকে একই সরলরেখায় জুড়ে দিয়েছে আরও একটি বিষয়৷ তা হল যোগ৷ যে যোগে কর্মীদের মানসিক চাপ ও রোগ নিরাময়ের পথ খুঁজে পাচ্ছে বহুনামী দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা৷ একটি সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫৩ শতাংশ কর্পোরেট সংস্থাই যোগকে আঁকড়ে ধরেছে৷ এমনকী, তা আবশ্যিক করেছে অফিস টাইমেই৷ কাজে দাঁড়ি টেনে কিছু সময় ব্যয় করা হচ্ছে কর্মীদের মানসিক কল্যাণে৷

সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ভ্রমণক্ষেত্রেও যোগ-রিসর্ট, আয়ুর্বেদ চিকিৎসার সুযোগ আছে, এমন হলিডে ফার্ম দাপিয়ে ব্যবসা করছে৷ গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি ব্যবসা করেছে তারা৷ বণিকসভা অ্যাসোচেমের রিপোর্ট, যোগ প্রশিক্ষণ আগ্রহীদের সংখ্যাতেও বার্ষিক ৩৫ শতাংশ বৃ‌দ্ধি পেয়েছে৷ অ্যাসোচেমের স্বাস্থ্য কমিটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ডাঃ বি কে রাও বলেছেন, অনেক বিজসেন স্কুলও যোগ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ছাত্রদের৷

অ্যাসোচেমের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াত জানিয়েছেন, “কর্মজীবনের ছাপ পড়ছে ব্যক্তিজীবনে৷ মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, কাজের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা সবাইকেই অস্থির করে তুলছে৷ আমাদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ কর্মী এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন৷ ভুগছেন মানসিক চাপ ও অবসাদজাত কোনও না কোনও রোগে৷ কর্পোরেট জগতের প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মী ৬ ঘণ্টারও কম সময় ঘুমাচ্ছেন৷”

দেশের বড় শহরগুলির কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তৈরি করা আর একটি বণিকসভার সমীক্ষা রিপোর্ট একটি বড় ইতিবাচক দিক অবশ্য খুলে দিয়েছে৷ তা হল, যোগ প্রশিক্ষকের বাজার এখন তুঙ্গে৷ তাঁরা ভাল আয় করছেন৷ গত বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করেছে যোগ ব্যয়ামের দুনিয়া৷ এর মধ্যে যেমন পর্যটন রয়েছে, তেমনই চিকিৎসা ও বিভিন্ন সংস্থার প্রশিক্ষণের ফলে আর্থিক বিকাশের দিকটিও রয়েছে৷ অর্থাৎ খুলে গিয়েছে বাজার অর্থনীতির আর-একটি দিক৷ হতাশার কর্পোরেট দুনিয়ায় আশার যোগসূত্র এটাই৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement