shono
Advertisement

Breaking News

পুলিশ সেজে প্রতারণা, ডাক্তারের ১১ লাখ হাতিয়ে নিল ‘সেক্সটরশন’ চক্র, ধৃত ১

দিল্লি, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রেও ছড়ানো এই চক্রের জাল।
Posted: 02:00 PM Jan 16, 2023Updated: 02:06 PM Jan 16, 2023

অর্ণব আইচ: ফের কলকাতায় ‘সেক্সটরশন’-এর (Sextortion) অভিযোগ। এবার চক্রের শিকার এক চিকিৎসক। তাঁর অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল সাইবার জালিয়াতরা। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে দেশজুড়ে নেটওয়াক্র চালানো একটি চক্রের সন্ধান পেলেন লালবাজারের (Lal Bazar) গোয়েন্দারা। দিল্লি, হরিয়ানা থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্র, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো রয়েছে এই চক্রের জাল। সেই সূত্র ধরেই দিল্লি থেকে ‘সেক্সটরশন’ চক্রের এক সদস‌্যকে গ্রেপ্তার করলেন কলকাতা পুলিশের সাইবার থানার আধিকারিকরা। এই চক্রে এখনও পর্যন্ত ৬ জন যুক্ত বলে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে খবর।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম কেরন রাস্তগির। পূর্ব কলকাতার ফুলবাগানের বাসিন্দা এক চিকিৎসক লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ জানিয়ে বলেন, দিল্লির পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে তাঁর মোবাইলে মেসেজ পাঠাতে শুরু করে এক ব‌্যক্তি। হোয়াটস অ‌্যাপের ডিপিতে পুলিশের ছবি দেখে তিনিও বিশ্বাস করে নেন। চিকিৎসককে বলা হয়, তাঁর ফেসবুক অ‌্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন ব‌্যক্তির কাছে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও যাচ্ছে। এই ব‌্যাপারে বহু মহিলা পুলিশের কাছে ওই ব‌্যক্তির নামে অভিযোগ জানাচ্ছেন। মহিলাদেরও পাঠানো হয়েছে তাঁর অশ্লীল ছবি। আবার তাঁর প্রোফাইল থেকে বহু মহিলার কাছে পাঠানো হয়েছে অশ্লীল মেসেজও। এই অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে তিনি টাকা দিলে ধরপাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে পারেন।

[আরও পড়ুন: এবার প্রস্রাবের গতি বলবে রোগের উৎস, মেডিক্যালে চালু ‘ইউরোডায়নামিক স্টাডি’]

প্রথমে তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে চাওয়া হয়। তিনি সম্মান হারানোর ভয়ে টাকা দিতে শুরু করেন। এর পর টাকার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এবার আরও এক ব‌্যক্তি নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্ল‌্যাকমেল করতে শুরু করে। এভাবে পরপর চারজন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা ‘তোলাবাজি’ করে। আরও টাকা চাইতে থাকলে এবার চিকিৎসক তা দিতে নারাজ হন। লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে জানতে পারে যে, এই ‘সেক্সটরশন’ চক্রের সদস‌্যরা ফেসবুকে চিকিৎসকের ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করে। তারা তাঁর আসল প্রোফাইল থেকে মোবাইল নম্বর পেয়ে তাতে হোয়াটস অ‌্যাপ পাঠায়। যদিও পুলিশের ধারণা, তার আগে কোনও সোশ‌্যাল মিডিয়ায় ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় ‘সেক্সটরশন’ চক্রের মাথাদের সঙ্গে।

[আরও পড়ুন: ‘প্রভাবশালী হিন্দু’দের খুনের ছক, ভারতীয় যুবককে হত্যার ভিডিও পাকিস্তানে পাঠাল ২ জঙ্গি]

তারা কোনওভাবে চিকিৎসকের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও স্ক্রিনশট নেয় বা ‘ক‌্যাপচার’ করে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। তদন্ত চলাকালীন গোয়েন্দারা দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের চারজনের মোবাইল নম্বর পান। এ ছাড়াও আরও দু’জনের নাম জানতে পারেন, যাদের অ‌্যাকাউন্টের মাধ‌্যমে পাচার হয়েছে ১১ লাখ টাকা। সেই সূত্র ধরেই দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার হয় কেরন রাস্তগির, যার ব‌্যাংক অ‌্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছে তিন লাখ টাকারও বেশি। সে এই চক্রের এক মাথার ভাই বলে জানা গিয়েছে। রবিবার দিল্লি থেকে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসার পর ব‌্যাংকশাল আদালতে তোলা হয়। তাকে পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। ধৃতের আইনজীবী সোয়েল ভট্টাচার্য আবেদনে জানান, ধৃতের পুলিশ হেফাজতের কোনও প্রয়োজন নেই। দু’পক্ষের বক্তব‌্য শুনে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ধৃতকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ওই যুবককে জেরা করে চক্রের বাকিদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement