ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: তৃণমূলের পাখির চোখ পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) লোকসভা আসন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা নেতৃত্বকে তৈরি হওয়ার নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, পঞ্চায়েত ভোটে দু-চারটে আসনে হারলেও সমস্যা নেই। কিন্তু নির্বাচনে গা জোয়ারি করা চলবে না। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতে জোর দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, পঞ্চায়েত ভোটের চেয়েও লোকসভা নির্বাচনকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে চাইছেন অভিষেক। তাই পঞ্চায়েত ভোটে হারজিত নয়, দলীয় সংগঠন মজবুত করার দিকে বিশেষ জোর দিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি, জনমানসে দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতেও বদ্ধপরিকর দলের সেনাপতি। আর তাই বারবার পঞ্চায়েত ভোটে পেশিশক্তি আস্ফালন থেকে দূরে থাকার বার্তা দিচ্ছেন জেলা নেতৃত্বকে।
[আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপে নিরাপত্তা দেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী! স্বাক্ষরিত হতে চলেছে চুক্তি]
পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি লোকসভা আসন- তমলুক ও কাঁথি। দুটোই খাতায় কলমে তৃণমূলের দখলে। কিন্তু দুই সাংসদ অর্থাৎ অধিকারী পরিবারের দুই সদস্য শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারী দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। আবার সেই পরিবারের সদস্য শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা। ফলে এই দুই আসনে স্বাভাবিকভাবেই নয়া মুখকে প্রার্থী করবে ঘাসফুল শিবির। অধিকারী ‘গড়’ থেকে দুই লোকসভা আসনকে ছিনিয়ে আনাও বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের। তাই এদিন তমলুক সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে সংগঠন জোরালো করার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। তবে নন্দীগ্রাম বা শুভেন্দু অধিকারীকে তিনি যে মোটেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নন, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাই এদিনের বৈঠকে এই প্রসঙ্গে একটি শব্দও তিনি খরচ করেননি বলে সূত্রের দাবি।
মঙ্গলবার ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে তমলুক, কাঁথি সাংগঠনিক জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন অভিষেক। বৈঠক শেষে পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়ক ফিরোজা বিবি জানান, “দু-চারটে আসনে হারলেও হারব। ভোটে গা জোয়ারি করা যাবে না। অভিষেক পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন।” একই কথা শোনা গিয়েছে সৌমেন মহাপাত্রর গলাতেও। বৈঠক থেকে এটা স্পষ্ট যে এবার পঞ্চায়েত ভোটে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি চায় না তৃণমূল (TMC)। নির্বাচনে কোনওরকম পেশিশক্তির প্রয়োগ বরদাস্ত করবে না দল। জিততে হবে সংগঠনের জোরে।