সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) বক্তব্যেই মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট! যদিও শুক্রবারের এই রায় নিয়ে নানা মহলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। শনিবার রায়ের কপি সুপ্রিম কোর্টের পোর্টালে আপলোড করা হলে সেখানেই ফের স্পষ্ট হয়েছে যে দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে অভিষেকের বক্তব্যই মান্যতা পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রায় সামনে আসার পর তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও (Kunal Ghosh) সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে লেখেন, ‘‘অভিষেক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১) বিচারপতিরা মামলা নিয়ে বিভ্রান্তিকর বিচ্ছিন্ন মন্তব্য করতে পারবেন না। ২) নজরদারির নামে তদন্তে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। ইডি নিয়মমতো কাজ করবে। ৩) মামলা সংক্রান্ত ভুল, বিভ্রান্তিকর রিপোর্টিং করা যাবে না।’
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তান সিরিজেই ফিট হয়ে উঠবেন পন্থ! কিন্তু…, বড় সিদ্ধান্ত বিসিসিআইয়ের]
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি এস ভি এন ভাট্টির বেঞ্চে অভিষেকের আইনজীবী গোপালকৃষ্ণণ আইয়ার বলেন, কলকাতা হাই কোর্টের এক মহিলা বিচারপতি এমন কিছু পর্যবেক্ষণ রাখছেন, যা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) সরকারি আইনজীবীও বলছেন না। দুর্নীতি, বিশাল সম্পত্তির মতো কথা উঠে আসছে তাঁর পর্যবেক্ষণে। যেগুলি হাতিয়ার করে বিরোধী নেতারা টুইট করছেন। চলছে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’। এই সময় তিনি ‘সাহারা বনাম সেবি’ মামলার উল্লেখ করে আদালতে অনুরোধ করেন, যেন মিডিয়ার প্রচার বন্ধের নির্দেশ দেয় আদালত।
বেঞ্চ চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বরের এবং ৫ অক্টোবরের ডিভিশন বেঞ্চের রায় উল্লেখ করে পর্যবেক্ষণে বলেছে, সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারককে মনে রাখতে হবে যে তদন্ত চলাকালীন যাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তাঁদের কারও বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করা যাবে না। মনে রাখতে হবে যে তলব করা ব্যক্তিদের কারও বিরুদ্ধে কোনও প্রতিকূল পর্যবেক্ষণ তাঁদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। আদালত আরও বলেছে, এটি নিশ্চিত করা হবে যে তদন্তকারী সংস্থা সমস্ত প্রয়োজনীয় এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করে আদালতে জমা করবে এবং তদন্তের ফলাফলের বিষয়ে আইনে নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করবে।
[আরও পড়ুন: সংসদে হামলার প্রতিবাদ করায় নয়, অন্য কারণে সাসপেন্ড বিরোধী সাংসদরা, সাফাই বিড়লার]
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ শুক্রবারের রায়ে, অতীতের ছ’টি মামলার উল্লেখ করেছে। যেসব রায়ে বলা হয়েছিল, যতক্ষণ না পর্যন্ত তদন্ত কোনও আইন বা ধারা লঙ্ঘন করছে, ততক্ষণ আদালতের পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন নেই। তদন্তের সমস্ত দিক বিচারবিভাগ দূরে থাকবে। এবং পুলিশি ডায়েরির তথ্য বা তদন্তে পাওয়া বয়ান আদালত প্রকাশ করতে পারে না। এমন কোনও পর্যবেক্ষণ আদালত দেবে না যা তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
সবশেষে বিচারপতি খান্না মনে করিয়ে দেন, সেবি বনাম সাহারা মামলায় মিডিয়া ট্রায়াল সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশ এখনও সব ক্ষেত্রেই বহাল। একইসঙ্গে আদালত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের বক্তব্য কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চে জানানোর নির্দেশও দিয়েছে।