বিধান নস্কর, দমদম: কাজ করতে গিয়ে ইডি (ED)আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় নিন্দার ঝড় সব মহলে। রাজ্যপাল, বিচারপতি সকলেরই মত, এই ঘটনা অপ্রত্যাশিত এবং চূড়ান্ত নিন্দনীয়। সন্দেশখালির (Sandeshkhali) সরবেড়িয়ায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উপর হামলার অভিযোগে ইতিমধ্যে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের পরিচয় এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি পুলিশ সূত্রে। তবে হামলাকারীদের আসল পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। শুক্রবার রাতে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে আহত ইডি আধিকারিকদের দেখতে গিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ”যাদের লেলিয়ে দেওয়া হল, তারা ভারতবর্ষের নাগরিক তো? অন্য কোনও জায়গার না তো? তারা নৌকা করে আসেনি তো? সঠিক তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে কারা কাকে আশ্রয়।”
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও বক্তব্য, ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণের বিষয়টি গোটা বাংলাকে দেশের কাছে ছোট করেছে। তাঁর কথায়, ”আমি জানতে চাই মা-মাটি সরকার তদন্ত আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে কত টাকা খরচ করেছে? আশা করি, যাঁকে খুঁজতে গিয়েছিল সেই শেখ শাহজাহান রাত ১২ টার মধ্যে ইডি অফিসে এসে ধরা দেবেন। আশা করব, তাঁর যাঁরা নেতা আছেন, তাঁরাই সেই নির্দেশ দেবেন।” জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযান চালিয়েই শুক্রবার হামলার মুখে পড়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: বয়স ভাঁড়িয়ে খেলছে ১২ বছরের বৈভব? বিহারের ক্রিকেটারকে নিয়ে চাপানউতোর তুঙ্গে]
এই ঘটনা শোনার পর হাই কোর্টে অন্য এক মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ইডিকে প্রশ্ন করেন, ”আপনাদের কাছে বন্দুক, লাঠি থাকে না? প্রয়োজনে চালাতে পারেন না?” আরও বলেন, “কেন এখনও রাজ্যপাল ঘোষণা করছেন না যে, রাজ্যের সাংবিধানিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে? যদি তদন্তকারীরাই মার খান, তাহলে তদন্ত হবে কী করে?” রাতেও নিজের এই বক্তব্যে অনড় তিনি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ”দুপুরে যা বলেছি, তা সচেতনভাবে বলেছি। আমি বিশ্বাস করি, পশ্চিমবঙ্গ সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে।” তবে এসবের চেয়েও বেশি ভাবাচ্ছে হামলাকারীদের নাগরিকত্ব নিয়ে বিচারপতির সংশয়। তারা কি বহিরাগত? এমনিতেই বসিরহাট সীমান্ত এলাকা, বাংলাদেশিদের যাতায়াত বেশি। শেখ শাহজাহান ও তাঁর অনুগামীরাও কি সেভাবেই সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে এসে স্থায়ী বসতি গড়েছেন? এসব প্রশ্ন উঠছেই।