কৃষ্ণকুমার দাস: জাতীয় লেকের মর্যাদা পাওয়া রবীন্দ্র সরোবরকে (Rabindra Sarobar) এবার নিউটাউনের প্রকৃতি তীর্থের আদলে ‘পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন ক্ষেত্র’ হিসাবে গড়ে তুলছে রাজ্য সরকার। বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার ভাবনাও শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরিবেশের উন্নয়নে সরোবরকে সাতটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। ভ্রমণার্থী ও পর্যটকদের কাছ থেকে পরামর্শ এবং দৈনন্দিন অভাব-অভিযোগ শুনতে এই প্রথম পৃথক অফিসও চালু করল ভারপ্রাপ্ত সংস্থা কেএমডিএ (KMDA)।
জানা গিয়েছে, সরোবরের জল সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দিতে জলভাগকে দু’টি অংশ এবং স্থলভাগকে পাঁচটি অংশে ভাগ করেছেন ভারপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়াররা। ভ্রমণার্থীদের ব্যবহৃত ময়লা বা প্লাস্টিক যাতে সরোবরের জলের ভিতরে না পড়ে তার জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থাও করছে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায় মাথায় রেখে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যায়নে সরোবরের পরিবেশ সংরক্ষণে একগুচ্ছ কর্মসূচি ও প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরিবেশ নিয়ে দৈনন্দিন নজরদারি এবং জনসাধারণের সরাসরি অভিযোগ গ্রহণে সরোবর চত্বরে অফিস চালু করছে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের অধীন কেএমডিএ। এবার কলকাতার ফুসফুস হিসাবে পরিচিত শতাব্দীপ্রাচীন সরোবরকে রাজ্য সরকার যে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে তার প্রমাণ, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নিজে এসে অফিস চালু করেন।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির একজনকে মারলে তৃণমূলের ৪ জনকে মারব’, হুমকি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরির]
১৯২০ সালে কেআইটির ১৯২ একর আয়তনের এই বিশাল হ্রদ সরকার অধিগ্রহণ করার পর এবারই প্রথম সাতটি জোনে ভাগ করে পরিবেশ সংরক্ষণের কাজ শুরু করছে। এর মধ্যে ৭৩ একরের জলাভূমিকে দুটি পৃথক জোনে ভাগ করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কেএমডিএ ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, দুটো লেককে আলাদা দুটি জোনে ভাগ করায় পরিযায়ী পাখি ও মাছ সংরক্ষণে সুবিধা হবে। দূষণের কারণে এখন শীতের মরশুমে আগের মতো ভিন দেশের নানা প্রজাতির পাখি আসছে না। আমফানের ধাক্কায় প্রায় তিনশো বড় গাছ ভেঙে পড়ায় পাখিদের বাসস্থানের আরও ক্ষতি হয়েছে। যদিও পুরমন্ত্রীর নির্দেশে ১১১টি উপড়ে পড়া বৃক্ষ রিপ্ল্যান্টেশন করেছে কেএমডিএ। প্রাতঃভ্রমণকারীদের অভিযোগ, সরোবর এখন ঠিকমতো সাফাই হচ্ছে না, ঝড়ের পর দীর্ঘদিন ভেঙে পড়া গাছের ডালপালা পড়েছিল। বস্তুত এমনই নানা অভিযোগের নিষ্পত্তি করার পাশাপাশি প্রাতঃভ্রমণকারী ও পর্যটকদের সুবিধা দিতেই নয়া পরিষেবা চালু করেছে রাজ্য সরকার।