বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: ঘনঘন রাজ্যের বাইরে ভ্রমণের জন্য বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে সতর্ক করেছে অমিত শাহর মন্ত্রক। শাহর কলকাতা সফরের দুদিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে রাজভবনের আধিকারিকদের ফোন করে সরকারি বার্তায় রাজ্যপালের ভ্রমণের বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যপালরা বছরের মোট দিনের কুড়ি শতাংশ অর্থাৎ ৭৩ দিন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বাইরে থাকতে পারেন। রাজ্যপাল বোস ইতিমধ্যেই কেরল-দিল্লি ঘুরে সেই সীমা ছুঁয়ে ফেলেছেন বলে খবর।
তার পরই শাহর মন্ত্রক থেকে এই বিষয়ে রাজভবনকে সতর্ক করা হয়েছে। এই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গের কোনও রাজ্যপালকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে তাঁর ভ্রমণের সর্বোচ্চ সীমা মনে করিয়ে দেওয়া হল। কয়েক মাসে রাজ্যপাল বোস কেরল-দিল্লি-কলকাতা বা কলকাতা-দিল্লি-কেরল রুটে বেশ কয়েকবার ভ্রমণ করেছেন। এমনকী বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দুই-এক দিন পর তাঁকে একই জায়গায় যেতে দেখা গিয়েছে। ফলে তাঁর বাংলার বাইরে বসবাসের কোটা পূরণ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যপালের সমস্ত খরচই রাজ্য সরকারকে বহন করতে হয়। এমনিতেই তিনি যখন তখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে চলে যান। তার পরও তিনি বছরের দুমাস বাকি থাকতেই আন্তঃ রাজ্য সফরের কোটা শেষ করে ফেলেছেন।
[আরও পড়ুন: আকাশপথে হামলা গাজার হাসপাতালে! মৃত ছাড়াল ৫০০]
রাজ্যপাল বোসের (C V Ananda Bose) ঘন ঘন সফরের জন্য তিনটি ভ্রমণ সংস্থা এক্সপ্রেস টিকিট বুকিং এবং এই বিভিন্ন জায়গায় দেখভালের ব্যবস্থা করার জন্য নিযুক্ত রয়েছে। এই সব কিছুই যে বাংলার রাজকোষের জন্য ব্যয়বহুল সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। একদিকে কেন্দ্র বাংলার প্রাপ্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আটকে রেখে দিয়েছে। বার বার দরবার করার পরেও প্রাপ্য টাকা দেওয়া হচ্ছে না। তার মধ্যে বোসের ভ্রমণের বিপুল খরচের সামলাতে হচ্ছে রাজ্যকে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই ২০১৫ সালে রাজ্যপালদের ভ্রমণ সংক্রান্ত আইনে সংশোধনী পাস করানো হয়েছিল এবং বছরের ৭৩ দিনের বেশি তাঁরা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বাইরে থাকতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির রাজ্যপালদের ঘন ঘন নিজের রাজ্যে চলে আসা ঠেকাতেই আইনে সংশোধনী আনা হয়েছিল। তার বেশি সংখ্যক ভ্রমণ করতে হলে রাজ্যপালদের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে বলে নয়া নিয়মে উল্লেখ রয়েছে। ভিন রাজ্যে ব্যক্তিগত সফরের জন্য দুসপ্তাহ আগে এবং সরকারি কাজ সংক্রান্ত সফরের জন্য এক সপ্তাহ আগে এই অনুমতি নিতে হবে। বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে সরকারি বা ব্যক্তিগত উভয় ক্ষেত্রেই ছমাস আগে অনুমতি নিতে হবে। স্বাভাবিক নিয়মে এখন বোসকে এ বছর পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্য রাজ্যে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিতে হবে। রাজ্যপাল চাইলে কেরল বা অন্য কোনও রাজ্যে যেতে পারবেন না। অথচ বোস প্রতি মাসের ১২ তারিখ কেরলের একটি মন্দিরে পুজো দেন। অক্টোবরেও ১২ তারিখে কেরলে যান।
