সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আগেই নাম জড়িয়েছে বিজেপি নেতা অরুণ হাজরার। সিবিআই চার্জশিটে তাঁর নামও উল্লেখ আছে। যে তথ্যপ্রমাণের নথি সিবিআই জমা দিয়েছে, তাতে একটি বিস্ফোরক চুক্তিপত্র পাওয়া গিয়েছে। অরুণ হাজরা এক্ষেত্রে নিজে হাতে চুক্তিপত্র করেছিলেন বলে খবর। ২০২২ সালে সেই চুক্তিপত্র লেখা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।

নথিতে জানা গিয়েছে, ১০ টাকার স্ট্যাম্পপেপারে নিজের হাতেই ওই চুক্তিপত্র লিখেছিলেন অরুণ হাজরা। কোন সময় কত টাকা কোন খাতে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয় উল্লেখ আছে সেখানে। শুধু তাই-ই নয়, ওই চুক্তিপত্রে অরুণ হাজরার সইও আছে। এছাড়াও আছে আরও তিনজনের সই। এই বিষয় সামনে আসতেই নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে।
ঘুরপথে নিয়োগের জন্য এজেন্টদের থেকে অরুণ হাজরা টাকা তুলেছেন বলে আগেই অভিযোগ উঠেছে। সেই টাকা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর কাছে গিয়েছিল বলে খবর। এই চুক্তিপত্রে বিভিন্ন খাতে দেওয়া সেই টাকার অঙ্কের উল্লেখ আছে বলে খবর। প্রাইমারিতে নিয়োগের জন্য ১১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা অরুণ হাজরা সুজয়কৃষ্ণকে দিয়েছিলেন। এছাড়াও গ্রুপ ডির জন্য ১৫ কোটি, গ্রুপ সির জন্য ৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। রেল-সহ অন্যান্য জায়গায় নিয়োগের জন্যও ৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৭৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল।
চুক্তিপত্রে যে অন্য তিনজনের সই আছে, তাঁদের সিবিআই আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এই চুক্তিপত্র অরুণ হাজরাই লিখেছিলেন বলে, তাঁরাও দাবি করেছেন। এমনই জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চাকরি বিক্রি নিয়ে যাবতীয় তথ্য ও হিসাব এই চুক্তিপত্রে রয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে আদালতে দেওয়া চার্জশিটে তা জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বিশেষ আদালতে তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই। সেখানেই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অরুণ হাজরার নামও উল্লেখ করা হয়।
এই অরুণ হাজরা উত্তর কলকাতার বিজেপি নেতা হিসেবে পরিচিত। একসময় তিনি কংগ্রেস করতেন। পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তাপস রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন গত লোকসভা নির্বাচনের আগে। সেসময় তিনিও দলবদল করে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান।