রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু নিয়ে জারি রাজনৈতিক তরজা। পুলিশের চালানো রাবার বুলেটের ঘায়ে তাঁর মৃত্যু বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। যদিও রাজ্য পুলিশের তরফে সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। দলীয় কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে দেখা করলেন বঙ্গ বিজেপি প্রতিনিধিরা। ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাহুল সিনহা-সহ বেশ কয়েকজন।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন রাহুল সিনহা (Rahul Sinha)। তিনি বলেন, “রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। আইনশৃঙ্খলা ভূলন্ঠিত। দলীয় কর্মীর মৃত্যু বিফলে যাবে না। আরও ব্যাপক আন্দোলন হবে। স্তাবক পুলিশরা যা খুশি তাই করছে। কেন মৃত্যু হল তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সাহস থাকলে হাই কোর্টের বিচারককে দিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক।” বিজেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের কিছুক্ষণ পর টুইট করেন রাজ্যপাল। ফের রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে নবান্ন অভিযান এবং টিটাগড়ে বিজেপি নেতা মৃত্যুর ঘটনাতেও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয় গেরুয়া শিবির।
[আরও পড়ুন: ৭ দিনের মধ্যে কলকাতা পুরসভার ভোটের দিন ঘোষণা করতে হবে, রাজ্য সরকারকে সু্প্রিম নির্দেশ]
উল্লেখ্য, সোমবার বেলা ২ টো নাগাদ বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শিলিগুড়ির (Siliguri) তিনবাত্তি মোড়। আচমকা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন যুব মোর্চার কর্মীরা। পুলিশ-বিজেপি কর্মী ধস্তাধস্তিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। তিনবাত্তি মোড়ের কাছে রাস্তায় বসে পড়েন যুব মোর্চার কর্মীরা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশের তরফে ঘোষণা করা হয়, ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। জমায়েতকে ছত্রভঙ্গ হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি বিজেপির যুব মোর্চা। এরপরই বিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। পালটা আঘাত হানে বিজেপি কর্মীরা। জলকামান ছোঁড়ে পুলিশ। দু’পক্ষের আক্রমণ, পালটা আক্রমণে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেখানেই ছিলেন শিলিগুড়ির আমবাড়ির মান্তাদাঁড়ির বাসিন্দা উলেন রায়। জানা গিয়েছে, পুলিশের ছোঁড়া একটি রবার বুলেট লাগে বছর পঞ্চাশের ওই বুথ কর্মীর বুকে। একেবারে পায়ের সামনে ফাটে টিয়ার গ্যাসের সেল। যার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ফুলবাড়ির একটি হাসপাতালে। সেখানেই ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এদিকে, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র (Kailash Vijayavargiya) অভিযোগ, তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। তাঁর দাবি, কেউ রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করলেই হামলার শিকার হতে হবে। দলীয় কর্মী মৃত্যুর প্রতিবাদে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ অবরোধ করে বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদের।