shono
Advertisement

বঙ্গ বিজেপিতে ‘বিদ্রোহে’রাশ টানতে কড়া পদক্ষেপ, বিক্ষুব্ধদের শোকজের ভাবনা

সূত্রের খবর, জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তেওয়ারিকে শোকজ করার পথে বঙ্গ বিজেপি।
Posted: 09:03 AM Jan 23, 2022Updated: 12:26 PM Jan 23, 2022

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দলে শুরু হওয়া বিদ্রোহে রাশ টানতে কি এবার কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পথে বঙ্গ বিজেপির (BJP) শাসকশিবির। দলীয় সূত্রে অবশ্য তেমনটাই খবর, দলের বিদ্রোহী শিবিরের দুই নেতা গেরুয়া শিবিরে পরিচিত মুখ জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তেওয়ারিকে এবার শোকজ করার পথে বঙ্গ বিজেপি। দু’জনেই দলের প্রাক্তন রাজ্য সহ-সভাপতি। এবার নয়া রাজ্য কমিটি থেকে পদ খুইয়ে বর্তমানে দলের বিক্ষুব্ধ শিবিরের অন্যতম প্রধান মুখ এই দু’জন। তাঁদের বিরুদ্ধে এবার দল পদক্ষেপ নিতে চলেছ বলে খবর। তাঁদে শোকজ করার পথেই দল এগোচ্ছে বলে রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে রীতেশ তেওয়ারিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “১৮ বছর বয়স থেকে বিজেপি করছি। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় ৩২ বছর এই দলের জন্য দিয়েছি। যদি শোকজ করা হয় তার চিঠি আমি পেলাম না কিন্তু খবর ছড়িয়ে গেল। তাহলে বুঝব আমার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে এটা তারই একটা অংশ। ১ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে দলের উত্থানের আমি সাক্ষী। যদি চিঠি পাই দলের একজন অনুগত সৈনিক হিসেবে তার উপযুক্ত জবাব দেব।”

এ বিষয়ে জানার জন্য জয়প্রকাশ মুজমদারকে ফোনে ধরার চেষ্টা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এদিকে, বঙ্গ বিজেপি বিক্ষোভে দলের শাসক শিবির রাশ টানতে চাইলেও বিক্ষোভ কিন্তু অব্যাহত। নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হাওড়া, বিষ্ণুপুর, মেদিনীপুর-সহ একাধিক জেলায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। আর এবার অবশ্য নতুন কৌশল নিচ্ছে বিক্ষুব্ধ শিবির। বাংলার ‘বিজেপি বাঁচাও’ এই স্লোগান তুলে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে হঠানোর দাবি জানিয়ে একাধিক জেলার একেবারে বুথ স্তরের নেতা-কর্মীরা চিঠি পাঠাচ্ছেন অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডার কাছে। ফলে অমিতাভ চক্রবর্তী-সহ শাসক শিবিরের আরও দু’-তিনজন নেতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুন আরও বাড়ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

[আরও পড়ুন: স্ত্রীর সামনেই মুম্বইয়ের মহিলাকে ‘ধর্ষণ’, ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল, কলকাতা থেকে ধৃত দম্পতি]

দলে চলা এই বিদ্রোহের মধ্যেই এবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়েও টানাপোড়েন। গোটা রাজ্যজুড়েই বিজেপিতে সংগঠনে যেন শূন্যতা। নতুন জেলা সভাপতি নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি কোথাও তৈরি হয়নি। মণ্ডলেও এখনও একই অবস্থা। নতুন কমিটিতে জায়গা হবে কী হবে না সেই দোলাচলে থেকে বহু নেতা-কর্মীরাই নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে রয়েছেন। জেলায় জেলায় কর্মসূচি সফল করতেই এখন দিশাহারা দল। কার্যত একই অবস্থা দলের যুব ও মহিলা সংগঠনেও। যুব ও মহিলা মোর্চার সভাপতি ঘোষণা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি হয়নি এখনও। যুব মোর্চার পুরনো নেতাদের বেশিরভাগই নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন। আর পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী পুরভোটের আগে গঠন করা নিয়েও রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরে মতভেদ রয়েছে।

একাংশের বক্তব্য, এখনই কমিটি করে দিলে বাদ পড়া নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে পারে, পুরভোটের আগে যা দলের কাছে বিপদের কারণ হতে পারে। আবার শাসক শিবিরের কয়েকজন নেতার কথায়, এখনই জেলাস্তরে সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে দেওয়া হোক। এই পরিস্থিতিতে বিড়ম্বনায় রাজ্য বিজেপির শাসক শিবির। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, “জানুয়ারি মাসের মধ্যেই সমস্ত পূর্ণাঙ কমিটি যাতে করে ফেলা যায় তার চেষ্টা করছি।” ৪২টি সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতিদের নাম ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু জেলা কমিটিতে কারা কাজ করবে সেই নতুন টিম নেই। আবার দলের ১২৬৩টি মণ্ডল ৭৭ হাজার বুথের অধিকাংশ কমিটিতেই কার্যত ছন্নছাড়া অবস্থা। এই পরিস্থিতি কাটাতে নতুন টিম তৈরি করা দরকার।

এদিকে, দলের বিক্ষুব্ধ শিবিরের সঙ্গে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কথা বলতে চান তা তিনি শুক্রবারই জানিয়েছিলেন। দলের বিদ্রোহী শিবিরের মুখ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গেও আগামীদিনে কথা বলবেন বলে শনিবার জানান সুকান্ত। তিনি বলেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবেই শান্তনু ঠাকুর দেশের একটি অন্যতম মন্ত্রকের মন্ত্রী। অর্থাৎ মতুয়া প্রতিনিধি হিসাবেই যে শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হয়েছে সেটাই এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি।

যেহেতু নয়া রাজ্য কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি না থাকা নিয়েই ক্ষোভ রয়েছে শান্তনু ঠাকুরের। তাই মতুয়াদের প্রতিনিধি হিসেবেই যে বনগাঁর সাংসদকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই বার্তাটাই পরোক্ষে এদিন শান্তনুকে দিয়েছেন সুকান্ত। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে, বিজেপিতে বিদ্রোহীদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, এরা কতজন? সংখ্যাটা কি ৫০ বা ৬০ পেরিয়েছে? যাদের সমস্যা হচ্ছে কথা বলা হবে। আর যে বিধায়করা নিরাপত্তারক্ষী ছাড়তে চান বলে জানিয়েছেন। তাঁরা নিরাপত্তারক্ষী রাখার খরচ বহন করতে পারছেন না।

[আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের কথা ভেবে নয়া উদ্যোগ রাজ্যের, চালু হচ্ছে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement