ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় (BJP MLA)। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যের উন্নয়নযজ্ঞে শামিল হতেই এই দলবদবল বলে জানালেন তিনি। ফলে বিজেপির (BJP) বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়াল ৭১।
বিজেপির একাধিক বিধায়ক তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন ঘাসফুল সবুজের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁদের সেই হুঁশিয়ারি যে একেবারেই ‘ফাঁকা আওয়াজ’ ছিল না তা গত কয়েকদিনে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। দিন কয়েক আগেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ এবং বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। এবার সেই পথে হাঁটলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়কও।
[আরও পড়ুন: নাকাশিপাড়ায় এসটিএফের হানা, ফের উদ্ধার সিমবক্স-সহ একাধিক অত্যাধুনিক যন্ত্র]
আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা সৌমেন রায়। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করতেন তিনি। মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন এই বিধায়ক। একুশের ভোটের আগে ২০২০ সালে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমেন। বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, তাঁকে প্রার্থী করার পর থেকেই বিজেপির অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। রীতিমতো রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। জিতে আসার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল সৌমেনের। অবশেষে শনিবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে দলে ফিরলেন তিনি।
এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়ে সৌমেন জানান, “দীর্ঘদিন তৃণমূলে ছিলাম। বিজেপির টিকিটে জিতেছিলাম ঠিকই। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে রাজ্যের উন্নয়ন করছেন সেই কাজে শামিল হতেই আমি তৃণমূলে এলাম।” তাঁর ‘ঘরে ফেরা’য় উচ্ছ্বসিত স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল সভাপতি কানহাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “কালিয়াগঞ্জে আমাদের সংগঠন দুর্বল ছিল। দলনেত্রীর উন্নয়নে অনুপ্রাণিত হয়ে দলে ফিরলেন সৌমেন। এতে আমাদের সংগঠন শক্ত হবে। কর্মীরাও উচ্ছ্বসিত হবে। সামনেই পুরভোট। সেখানে জয় নিশ্চিত হল।”
[আরও পড়ুন: Govt Job: রাজ্য খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরে একাধিক বিভাগে কর্মী নিয়োগ, সুযোগ মিস করবেন না]
নাকের ডগা দিয়ে তৃণমূলে ফিরে গেলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক। অথচ সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার। তিনি বলেন, “এব্যাপারে জানি না।খোঁজ নিচ্ছি। তবে দলের সাথে বেইমানি করা হল।” দিন কয়েক আগেই উত্তরবঙ্গের ২৯ জন বিধায়ককে নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গে ৫ বিধায়ক। তাঁরা দলবদল করতে পারেন বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। এমন আবহে সৌমেন রায়ের দলবদল সেই জল্পনা আরও উসকে দিল। এবার প্রশ্ন উঠছে উত্তরবঙ্গ বিজেপিতে কি ভাঙন শুরু হয়ে গেল?