রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বহু বুথে কমিটি তৈরি হয়নি। বুথস্তরে সাংগঠনিক শক্তি ভাবাচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। পাশাপাশি ঘরোয়া কোন্দল। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যে এসে পৌঁছলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। বৃহস্পতিবার বেথুয়াডহরির সভা থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে দলের কর্মী-সমর্থকদের কী বার্তা দেন সেদিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। পাশাপাশি আজ নদিয়াতেই জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে একটি সাংগঠনিক বৈঠকের কথা রয়েছে নাড্ডার। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জেলা নেতাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথাও শুনবেন তিনি। দলের মধ্যে চলা ডামাডোল নিয়ে জেলা নেতারা যদি বেফাঁস কিছু বলে ফেলেন নাড্ডার সামনে তা নিয়ে অবশ্যই চিন্তায় রাজ্য বিজেপির (BJP) ক্ষমতাসীন শিবির।
এদিকে, নাড্ডার বঙ্গ সফর নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি সভাপতির বাংলায় আসা নিয়ে আমরা ভাবছি না। উনি নিজের রাজ্য হিমাচলে বিজেপি সরকারকে ক্ষমতায় ধরে রাখতে পারেননি। শীতের সময় পর্যটনের জন্য খুব ভাল। এই সময় চিড়িয়াখানার পুকুরে ও সাঁতরাগাছির ঝিলে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে। উনি তেমনই একটা পরিযায়ী পাখি।’’
[আরও পড়ুন: একবছরে দ্বিতীয়বার! বিতর্কের মাঝেই ফের সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’]
বৃহস্পতিবার সকালে নিউটাউনের হোটেলের সামনে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে মেয়াদ বৃদ্ধি উপলক্ষে জে পি নাড্ডাকে সংবর্ধনা দেবে রাজ্য বিজেপি। তার পরই নদিয়ায় মায়াপুরে ইসকনের (ISKON) মন্দিরে যাবেন। এরপর বেথুয়াডহরির জুনিয়র ইস্টবেঙ্গল ময়দানে তাঁর জনসভা রয়েছে। বিকেলে কলকাতা থেকেই বারাণসীর উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই রাজ্য বিজেপির কয়েকজন শীর্ষনেতা এবং নদিয়া উত্তরের জেলা টিমের সঙ্গে একটি সাংগঠনিক বৈঠক করবেন নাড্ডা। এবারই প্রথম একেবারে নিচুতলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলবেন।
[আরও পড়ুন: ‘সুজন দাশগুপ্তর কাছে আমি ঋণী’, লেখকের মৃত্যুতে শোকাতুর ‘একেনবাবু’ অনির্বাণ চক্রবর্তী]
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেছেন, ২৫টি লোকসভা আসনে জেতার টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি। যদিও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) অবশ্য ভিন্ন মত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সভাপতি একটা টার্গেট রেখেছেন। বাকিরা সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য লড়বেন। তবে ২৫টি আসনে জেতার কথা বলা হচ্ছে, সেটা ৩০টিও হতে পারে।’’ প্রশ্ন, দুই শীর্ষনেতার মধ্যে তাহলে কি সমন্বয়ের অভাব রয়েছে? বাংলাতেও একটা বড় অংশের বুথে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু এলাকায় সংগঠন গড়ে তুলতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। আরামবাগের একটি কর্মিসভায় সংখ্যালঘু এলাকায় বেশি বেশি করে যাওয়ার জন্য মোর্চার কর্মীদের বলেন রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি চার্লস নন্দী। এদিকে, কাল থেকে দু’দিন দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে রাজ্য বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক। বৈঠকে না থাকলেও লোকসভা ও পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে সেখানে আগামী কর্মসূচি ও দলের রণকৌশল কী হবে, তা নিয়ে আজই সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষদের গাইডলাইন দিয়ে যাবেন জে পি নাড্ডা।