রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্য আবগারি দপ্তরের অধীনে মদের দোকান, বার ও নাইট ক্লাবে মহিলাদের নিয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শনিবার পথে নামল বঙ্গ বিজেপি। আর সেই মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার বেঁধে যায় কলেজ স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। বিজেপির দাবি, বাংলায় মদের দোকান, বার ও নাইট ক্লাবে মহিলাদের কাজ করার মতো পরিস্থিতি নেই। যদিও তাদের এই দাবির নিন্দা করেছে রাজ্যের শাসকদল।

দিন কয়েক আগেই বিধানসভায় নয়া বিল পাশ হয়। যেখানে বলা হয়, এবার থেকে বার কাম রেস্তরাঁ, লিকার অন শপে বসার ক্ষেত্রে আর বাধা থাকছে না মহিলাদের জন্য। উল্লেখ্য, ভিনরাজ্যে বার, রেস্তরাঁর কাউন্টারে মহিলারাও থাকেন। কিন্তু বাংলায় সেই নিয়ম ছিল না এতদিন। এবার তা বদল হল। এর বিরোধিতা করে রাস্তায় নামে বিজেপির মহিলা মোর্চা। তাদের ডাকে কলেজ স্কোয়ার থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি অধিদপ্তর, বউবাজার পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল ডাকা হয়। সুকান্তর নেতৃত্বে মিছিলে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, তাপস রায়-রা মিছিলে থাকলেও জমায়েত সেভাবে হয়নি। তারই মধ্যে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে পুলিশ মিছিল আটকায়। সেখানে ব্যারিকেডের উপর উঠে, মহিলা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেন প্রাক্তন সাংসদ রূপা। আবার পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিধায়ক অগ্নিমিত্রা। জমায়েত কম হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের দু’ঘন্টা পরে মিছিল শুরু হয়। মিছিল শুরুর আগে একটি ট্রাম রাস্তায় চলে আসায় সেটি আটকে মহিলা কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। ১৪৪ ধারা অমান্য করেই রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়।
বিজেপির অভিযোগ, বাংলায় মহিলাদের নিরাপত্তা দিয়ে ব্যর্থ রাজ্য সরকার। তারপরেও এমন ক্ষেত্রে মহিলাদের নিয়োগ করা হবে যেখানে যে কোনও মুহূর্তে নিরাপত্তা লঙঘিত হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির মহিলা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পল বলেন, "তৃণমূলের পুলিশ মহিলাদের এফআইআর নেয় না। মহিলাদের সম্মান করে না। এমন অবস্থায় বার, পাবে মহিলারা কাজ করলে তাগের নিরাপত্তা নিয়ে আরও চিন্তা বাড়াবে।" বিজেপির এই আন্দোলন প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মহিলাদের উন্নয়ন কীভাবে হয় সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছেন। বিজেপিকে ভাবতে হবে না। মহিলা মোর্চার উচিত আগে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মিছিল করা।’’
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, কলকাতা মহিলাদের জন্য নিরাপদতম শহর। কেন্দ্র সরকারই জানিয়েছে, এ শহরে মহিলারা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। তাদের নিরাপত্তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মহিলাদের এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন। সেখানে পেশাগত জগতে মহিলা-পুরুষে ভাগাভাগি করছে বঙ্গ বিজেপি। তবে কি প্রধানমন্ত্রীর স্লোগানের বিরুদ্ধাচারণ করছে তারা?