রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: একের পর এক নির্বাচনে বারবার বাংলায় পর্যুদস্ত বিজেপি (BJP)। হারের নেপথ্যে গেরুয়া শিবিরের অন্তর্কলহই প্রধান কারণ হিসাবে উঠে এসেছে। তবে অনেকেই মনে করেন, বাংলাবাসীর প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ বিজেপি। সিএএ’র কথা বললেও তা এখনও পর্যন্ত কার্যকর করতে পারেনি পদ্মশিবির। তার জেরে বাংলায় বিজেপি বেশ ধাক্কা খেয়েছে। বিশেষত মতুয়া ভোট কমেছে বলেই অনুমান অনেকের। এই পরিস্থিতিতে সিএএ নিয়ে সকলকে অবাক করার মতো দাবি করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সম্প্রতি হায়দরাবাদে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দেন সুকান্ত মজুমদার। বাংলায় ফিরেই মঙ্গলবার তিনি বলেন, “বিজেপি যা বলে তা করে। রামমন্দির কেন্দ্রীয় বিজেপির লক্ষ্য ছিল। আইন ছাড়াই আমরা তা করে দেখিয়েছি। সিএএ (CAA) আমাদের লক্ষ্য। আমরা করে দেখাব, ২০২৪ সালের অনেক আগেই।” সুকান্তর দাবিতে স্বাভাবিকভাবেই নানা জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই লোকসভা ভোটের আগে সিএএ বাংলায় কার্যকর হবে? সিএএ-কে হাতিয়ার করেই কি বাংলার ভোটারদের মন জয় করতে চাইছে বিজেপি?
[আরও পড়ুন: পুরীতে বলরাম, সুভদ্রার রথের চাকায় ফাটল! ‘অশুভ ইঙ্গিত’ মনে করছেন ভক্তরা]
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ নিয়ে মতুয়াদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। গত মার্চে মতুয়া মহা ধর্মমেলার সময় ভারচুয়াল সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) এ বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের পর প্রথবার বঙ্গ সফরে এসে সিএএ নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। করোনা মিটলেই সিএএ কার্যকর হবে বলেই শিলিগুড়ির সভামঞ্চ থেকে আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। এবার সেই একইরকম আশ্বাসবাণী সুকান্তর (Sukanta Majumdar)। লোকসভা ভোটকে টার্গেট করেই বাংলার সংগঠনকে শক্তপোক্ত করছে বিজেপি। এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সুকান্তর দাবি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সুকান্তর এই মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি বলেন, “ওষুধ, সার, পেট্রলের দাম বেড়েই চলেছে। চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণের ত্রিসীমানায় নেই কেন্দ্র। সুদ কমছে। মানুষের উপর আর্থিক চাপ বাড়ছে। সেদিক থেকে নজর ঘোরাতে এসব বলছে। বাংলার মানুষ ভোটের আগে এসব বলার জন্য ওদের প্রত্যাহার করেছে। আমাদের বক্তব্য, যারা এ রাজ্যের নাগরিক, ভোটার তালিকায় নাম আছে, যাঁদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা এ দেশের নাগরিক। একথা তৃণমূল আগেই বলেছে। আজকাল যা ঘটনা ঘটছে এসব বক্তব্য তাদেরই শাখাপ্রশাখা। দেশের মানুষের মধ্যে বিষ ঢালছে। আর্থিক চাপ তৈরি করছে। বাংলার মানুষ এ জিনিসকে সমর্থন করবে না।”