সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়নি এখনও। এদিকে রাজ্যে ঢুকতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)। নির্বাচন উপলক্ষ্যে রাজ্যে আসার কথা ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর। তার মধ্যে শুক্রবার রাজ্যে এসেছে ১০০ কোম্পানি আধা সেনা। তাঁদের থাকার জন্য বন্ধ হয়েছে উত্তর কলকাতার বেথুন-সহ একাধিক স্কুলের পঠনপাঠন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানালেন, “এভাবে পঠনপাঠন বন্ধ হলে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখব আমরা।”
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার জন্য স্থানীয় থানা থেকে উত্তর কলকাতায় বেথুন স্কুলকে (Bethun School) নোটিস দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। নোটিসের জেরেই স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন বন্ধ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নবম ও দশম শ্রেণিতে অর্ধেক ক্লাস হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জেরে শুধু শুক্রবার নয়, আগামী দিনেও পঠনপাঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার ব্যবস্থা হওয়ায় পঠনপাঠন বন্ধ হয়েছে আনন্দপুর, মেটিয়াবুরুজ, যাদবপুর, তিলজলার একাধিক স্কুলে।
এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এখনও ভোটের দিন ঘোষণা হয়নি। এত তাড়াহুড়ো কীসের বুঝতে পারছি না। এভাবে পঠনপাঠন বন্ধ হলে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখব আমরা।” এদিকে শুধু কলকাতার স্কুল নয়, রাজ্যের আরও নানান প্রান্তে দফায় দফায় আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেখানেও স্কুলগুলিতে পঠনপাঠনে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: লেকটাউন গার্লস হাইস্কুলের পাশে পড়ে শিশু, হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু, ঘনাচ্ছে রহস্য]
এদিকে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যাওয়ার এই ঘটনায় কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী সেটা রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশন মিলে ঠিক করুক। কিন্তু কোনওভাবেই লেখাপড়ার বারোটা বাজিয়ে কিছু করা যাবে না। এমনিতে রাজ্যে স্কুলগুলি উঠে যাওয়ার মুখে প্রায়। তার মধ্যে এসব বিষয় কাম্য নয়।”
অন্যদিকে, বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা দৃষ্টিকটুভাবে অবনতির জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী বাংলায় এত পরিমাণে আসতে বাধ্য হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দরকার। আর বাহিনী এলে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা তো করতেই হবে রাজ্য সরকারকে। রাজ্য ঠিক করুক কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তাঁরা কোথায় রাখবে।”
[আরও পড়ুন: পরীক্ষা দিতে পারবে ‘ব্রাত্য’ ১২ হাজার চাকরিপ্রার্থী? সিদ্ধান্ত নিতে শনিবার বসল আদালত]
তবে স্কুলগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার বিষয়ে কিছুই জানে না মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এ বিষয়ে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে জানান, তাঁদের কিছুই জানানো হয়নি। পর্ষদ সভাপতির কথায়, “বিষয়টি আমি শুনেছি। মার্চের প্রথম দিন থেকেই যদি এভাবে স্কুল নিয়ে নেওয়া হয় তাহলে পঠনপাঠনে ভীষণ সমস্যা হবে। সামনে পরীক্ষাও রয়েছে। পঠনপাঠনের বিকল্প ব্যবস্থা কী হবে, সে বিষয়েও আমার সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি।”