গোবিন্দ রায়: নির্মাণকাজে পুলিশি হস্তক্ষেপ নিয়ে আদালতে প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার। কারণ, নবান্নের ১০০ মিটারের বাইরে নির্মাণকাজ আটকে দিয়েছিল পুলিশ। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন এক ব্যক্তি। নবান্নর নিরাপত্তা জোনের বাইরেও পুলিশি হস্তক্ষেপ কেন? প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে।
নিরাপত্তার স্বার্থে নবান্নের ১০০ মিটারের বাইরে একটি বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কাজ আটকে দেয় পুলিশ। সেই নির্মাণ কাজের অনুমতি পেতে হাই কোর্টে মামলা হয়। এই মামলায় মামলাকারীর প্রশ্ন ছিল, "মানুষ কি পুলিশ রাজ্যে বাস করছে?" এরপরই বিচারপতি কৌশিক চন্দের নির্দেশ," প্রশাসনিক কার্যালয় নবান্ন ভবন ছাড়া আর কোন এলাকা সিকিউরিটি জোনের মধ্যে পড়ে তার নোটিফিকেশন দেখান! এটা দেখতে পেলে খুশি হব।"
মামলাকারি ওই নির্মাণ সংস্থার আইনজীবী সুমিতাভ চক্রবর্তী জানান, "হাওড়া পুরসভা এলাকায় ক্ষেত্রমোহন ব্যানার্জি লেনে একটি পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়। ২০২০ সালে হাওড়া পুরসভা অনুমতি দিলেও পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে ওই নির্মাণে বেশকিছু শর্ত দেয়। নির্মাণ সংস্থা সমস্ত নিয়ম মেনে কাজ করতে চায়। তারপরও নির্মাণ আটকে থাকে।" তাঁদের দাবি, নির্মাণের ক্ষেত্রে পুলিশের কোন বক্তব্য থাকতে পারে না। পুর-প্রশাসনই ক্ষমতার অধিকারী। বিচারপতি চন্দ জানতে চান, "নবান্নর নিরাপত্তা জোনের বাইরেও পুলিশি হস্তক্ষেপ কেন?"
উত্তরে রাজ্যের কৌঁসুলি বিশ্বব্রত বসু মল্লিক জানান, "নবান্ন সিকিউরিটি জোনের আওতায় পড়ে। তার সাপেক্ষে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছিল। শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নয়, অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সেখানে বসেন তাঁদের নিরাপত্তায় উচ্চতা থেকে শুরু করে বাড়ির জানালা ১৭ টি বিষয়ে গাইডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়। বাকি ১৪ টি শর্ত মানলেও জানালা-সহ ৩টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত আটকে রয়েছে।"
বিচারপতির আরও প্রশ্ন, "রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কার্যালয় নবান্নের নিরাপত্তা নিয়ে হাই কোর্ট সচেতন হলেও রাজ্য নিজে কি সচেতন? নবান্নর নিরাপত্তা জোনের মধ্যে যে এলাকা নেই সেখানে পুলিশ কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে?" রিপোর্ট দিতে হবে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে।
