অর্ণব আইচ: রেশন দুর্নীতি মামলায় আদালতের তোপের মুখে ইডি। তাদের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। তাঁর পর্যবেক্ষণ, সাক্ষীকে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। বিচারকের কথায়, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের বেতন ঠিক করে দিতে পারে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
শনিবার কলকাতার বিচারভবনে স্পেশাল সিবিআই কোর্টে বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে রেশন দুর্নীতির ইডির মামলায় চালকল মালিক হিতেশ চন্দক, সুব্রত ঘোষ, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের শান্তনু ভট্টাচার্য-সহ চারজনের জামিন মামলার শুনানি ছিল। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন জানায় ইডির আইনজীবী। এই প্রেক্ষিতে শান্তনু ভট্টাচার্যের আইনজীবী শ্যামল ঘোষ জানান, এই মামলা কবে শেষ হবে তার কোনও ঠিকানা নেই! ২০২৩ সাল থেকে তদন্ত হচ্ছে। তাঁর আরও সাফাই, "আমি একজন একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। সামাজিক সম্মান আছে। আমার এই মামলা সঙ্গে কোনও সংযোগ নেই। তাও তদন্তের স্বার্থে আমি ২৮ বার হাজিরা দিয়েছি। এই ট্রায়াল তাড়াতাড়ি শেষ করার আরজি জানাচ্ছি।" শান্তনুর অপর আইনজীবী অনিন্দ্য রাউত বলেন, "এতদিনে একবারও দেখানো হয়েছে যে আমার মক্কেল বেনিফিশিয়ারি! ওঁ কাকে কত টাকা দেবেন, সেটা ওরা (ইডি) কী করে বলে দিতে পারেন?" তিনি আরও জানান, "আমাদের থেকে টাকা ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে ইডির হতে গিয়েছে।"
এরপরই বিচারকের প্রশ্ন, "তিনটে সংস্থার টাকা যে ওঁ ফেরত দিচ্ছেন, সেটা কি আপনাদের অর্ডারে? ইডি কি এই কোম্পানিগুলোর মালিক?" জবাবে ইডির আইনজীবী জানান, এগুলো সরকারি কোম্পানি। এরপরই বিচারকের প্রশ্ন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা ডিমান্ড ড্রাফটে টাকা ফেরত দিচ্ছে কেন? আইও-কে বিচারকের প্রশ্ন, কোন আইনের ভিত্তিতে এটা হয়েছে? বিচারক আরও বলেন, "পিএমএলএ অ্যাক্টে কীভাবে গ্রেপ্তার করা হবে, কখন করা হবে, কীভাবে তদন্ত হবে, সব লেখা আছে। তাহলে এটা কোন আইনের ভিত্তিতে হল?" তদন্তকারী অফিসারের সাফাই, "আমি ঊর্ধ্বতন কর্তার নির্দেশে কাজ করেছি।"
বিচারকের আরও প্রশ্ন, "উনি হয়তো একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে ওঁর প্রফেশনাল যা দায়িত্ব সেই অনুযায়ী কাজ করেছেন। তাঁকে আপনি জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন, গ্রেপ্তার কেন করবেন?" বিচারক প্রশ্ন তোলেন ধৃতদের হেফাজতে চাওয়া নিয়েও। এই মামলায় আপাতত রায়দান স্থগিত।