বিধান নস্কর, দমদম: পুজোর মুখে ভাসছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। সমতলের মালদহ থেকে পাহাড়ের কালিম্পং, দার্জিলিং ক্ষতিগ্রস্ত। ১০ নং জাতীয় সড়কে এখনও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। জলপাইগুড়ির বহু এলাকা জলমগ্ন। নদী তীরবর্তী জায়গার ঘরবাড়ি জলের নিচে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে, ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। নতুন করে কিছু জায়গা বানভাসি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার উত্তরবঙ্গে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে শিলিগুড়ি পৌঁছে উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তিনি। যাওয়ার পথে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী দায়ী করলেন নেপালের কোশী নদীর জলকে। বললেন, ''কোশী নদীর জলে বানভাসি উত্তরবঙ্গের বহু এলাকা। সেই জল বিহার দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেছে। আর অন্যদিকে, সংকোশ নদীর জলস্তর বৃদ্ধিতে মালদহে বন্যা।''
একটানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। ১০নম্বর জাতীয় সড়কে ধসের কারণে বিচ্ছিন্ন সিকিম। আবার একইভাবে সমতলের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি। মালদহে নদী তীরবর্তী অংশে ভাঙনের ফলে তলিয়ে গিয়েছে বেশ কিছু কাঁচা বাড়ি। এছাড়া তিস্তা ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়ার ফলে জলপাইগুড়ি, মালবাজারে প্লাবন পরিস্থিতি। আবহাওয়া দপ্তর উত্তরে হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। নদীর পাশ্ববর্তী এলাকা খালি করতে বলা হয়েছে। সামগ্রিক এই দুর্যোগ নিয়েই বৈঠক করতে রবিবার দুপুরে শিলিগুড়ি রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত তিনদিন ধরে প্রবল বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত নেপাল। লাগাতার বর্ষণের জেরে বন্যায় ভেসে গিয়েছে গোটা দেশ। বন্যার মধ্যেই ব্যাপক ভূমিধসের কবলে পড়েছে প্রতিবেশী দেশের একাধিক এলাকা। সবমিলিয়ে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে রাজধানী কাঠমান্ডু-সহ একাধিক এলাকা। ইতিমধ্যেই নেপালে ১১২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। পড়শি দেশের এহেন অবস্থায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভারতেও। বিহারে জারি হয়েছে বন্যা সতর্কতা। সেই পরিস্থিতি নিয়ে এদিন বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, ''কোশী নদীর জলে বিহারেও এবার বন্যা পরিস্থিতি। ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। আর বিহার হয়ে এরাজ্যে উত্তরের দিকটায় জল ঢুকছে। দক্ষিণ দিনাজপুরেও প্লাবন হতে পারে। সতর্ক থাকতে হবে। এক নেপালের জলে বাংলা, বিহার ভাসছে। আর ফরাক্কায় তো ড্রেজিংই হয় না। ''