সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে বাংলায় কথা বললে 'বাংলাদেশি' তকমা দেওয়া হচ্ছে! সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এর তীব্র নিন্দা করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, "বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলির অন্তর্ভূক্ত। তাই যাঁরা এই ধরনের মন্তব্য করেন, তাঁদের নিন্দা করছি।''
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার কলকাতার তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর একটি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে। এদিন পুর অধিবেশনে অরূপবাবু খবরের কাগজের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে রীতিমতো ক্ষোভের সুরে বলেন, ''দিন কয়েক আগে মেট্রো স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে বাংলায় কথা বলায় হেনস্থা, কটু মন্তব্যের শিকার হতে হয়েছে। বাংলায় কথা বললে তাঁদের শুনতে হয় 'এটা বাংলাদেশ নয়', 'হিন্দুস্তানে থাকতে গেলে হিন্দিতেই কথা বলতে হবে' - এ জাতীয় মন্তব্য।'' এরপর অরূপ চক্রবর্তীর প্রস্তাব, কলকাতা মেট্রো, রেল, ব্যাঙ্ক-সহ সরকারি, বেসরকারি সংস্থায় বাংলায় কথা বলা মানুষকে বাংলায় পরিষেবা দেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। এনিয়ে পুরসভা যেন পদক্ষেপ নেয়।
অরূপবাবুর আরও বক্তব্য, রাজ্যের ৮৬ শতাংশ মানুষ বাংলায় বলেন। এর মধ্যে ৮৩ শতাংশ বাংলার পাশাপাশি হিন্দিতেও কথা বলেন, এই তথ্য শেষ আদমসুমারি অনুযায়ী। প্রস্তাবের পক্ষে জবাব দিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। অনভিপ্রেত। এমনটা দেশের কোনও রাজ্যে হয় না।" মেয়র জানিয়েছেন যে তিনি বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন। মেট্রোরেলের জিএম-কেও লিখিতভাবে তা জানানো হবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের উচিত, এমন কর্মীকে কাউন্টারে বসানো যিনি বাংলা, হিন্দি ইংরেজি - তিন ভাষাতেই কথা বলতে পারেন। মেয়রের কথায়, "ভারত তো বটেই গোটা বিশ্বে বাঙালি আছেন। যাঁরা বাংলা ভাষায় কথা বলেন। কাজেই কলকাতায় বসে বাংলায় কথা বললে বাংলাদেশে যেতে হবে - এমন মন্তব্য অত্যন্ত অপমানজনক।'' উল্লেখ্য, কলকাতা পুর এলাকায় সব বাণিজ্যিক সংস্থায় নামফলক বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক করছে কলকাতা পুরসভা।