ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যের কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তাই ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পকে কড়া বিধিনিষেধের আওতায় এনে আপাতত স্থগিত রাখার দাবি তুলেছেন রেশন ডিলাররা (Ration Dealers)। কিন্তু এই প্রকল্প ‘অত্যাবশ্যকীয়’, এই যুক্তিতে তা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে বলে জানিয়ে দিল খাদ্য দপ্তর। একইসঙ্গে রেশন কার্ডে বায়োমেট্রিক লিংকের কাজেও কোনও বিধিনিষেধ রাখা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
ডিসেম্বর মাস থেকে টানা ‘দুয়ারে রেশন’ (Duare Ration) প্রকল্প চালু করে দেয় রাজ্য সরকার। রাজ্যের ১০০ শতাংশ গ্রাহকের জন্য এই প্রকল্প চালু করা হয়। তবে পর্যাপ্ত লোকবল ও পরিকাঠামোর অভাবে তা পুরোপুরি শুরু করা যায়নি। পুরনো নিয়ম মেনেই দোকান থেকে রেশন বিলি ব্যবস্থা চালানোর দাবি তুলেছিল রেশন ডিলারদের সংগঠন। এমনকী, সরকারি প্রকল্প রুখতে পরপর মামলাও দায়ের হয়। কিন্তু তাতে ধাক্কা খেতে হয় রেশন ডিলারদের সংগঠনকে।
[আরও পড়ুন: COVID-19: কোভিডবিধির জেরে সোমবার থেকে কমছে লোকাল ট্রেনের সময়সীমা, কী জানাল রেল?]
কোভিড পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় রবিবার নতুন করে কড়া বিধিনিষেধ আরোপের পথে হাঁটে নবান্ন (Nabanna)। তবে অত্যাবশ্যকীয় কোনও পরিষেবাই এর আওতায় থাকবে না বলে জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী। এরপরই দুয়ারে বা পাড়ায় গিয়ে রেশন ব্যবস্থা চালানো যাবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ডিলাররা দাবি তোলেন তা আপাতত স্থগিত রাখার। কিন্তু খাদ্য দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, তা হবে না। কারণ দুয়ারে রেশন অত্যাবশ্যকীয় প্রকল্প। দপ্তরের সচিব পারভেজ সিদ্দিকি এ নিয়ে স্পষ্টভাবেই বলেন, “লকডাউনেই (Lockdown)তো রেশন ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়নি। রেশন না দিলে মানুষ খাবে কী করে? আর দুয়ারে রেশন ব্যবস্থা তো স্বাস্থ্যকর। আর দুয়ারে রেশনে এক জায়গায় কাউকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। খোলা জায়গায় গাড়ি থাকবে। যাঁরা নেবেন, এসে নিয়ে চলে যাবেন।” তাঁর কথায়, “মানুষকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্প চালু করেছেন। তাই দুয়ারে রেশন, দোকানে রেশন কোনও কিছুই বন্ধ করা হবে না।”
[আরও পড়ুন: COVID-19: সোমবার থেকে রাজ্যে বন্ধ সমস্ত স্কুল-কলেজ, লোকাল ট্রেন নিয়ে বড় ঘোষণা নবান্নের]
তবে এনিয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন রেশন ডিলারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস’ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। তাঁর কথায়, “অনেক মানুষ একসঙ্গে এসে রেশন নেবেন। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আমাদের দাবি, অন্তত এক মাসের জন্য এই প্রকল্প পিছিয়ে দেওয়া হোক।” রাজ্যকে তাঁরা লিখিত আকারে সমস্যার কথা জানিয়ে চিঠিও দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, আরও একটি মামলার জেরে রেশন দোকানে বায়োমেট্রিক লিংকের (Biometric Link) কাজ আপাতত বন্ধ। তা খাদ্য দপ্তরের তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করার কথা একটি সংস্থার। বায়োমেট্রিক লিংকের ক্ষেত্রে সেন্সরে আঙুল ছুঁয়ে তা করাই দস্তুর। করোনা বিধির যা পরিপন্থী। তবে সবরকম বিধি মেনে স্যানিটাইজার ব্যবহার করে সেই কাজ চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে খাদ্য দপ্তর।