shono
Advertisement

Breaking News

পরীক্ষার আগেই ট্রেনিং সেন্টারে পৌঁছে যেত প্রশ্ন! টেট দুর্নীতির তদন্তে ইডির হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি জানতেন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য।
Posted: 09:42 AM Oct 18, 2022Updated: 09:42 AM Oct 18, 2022

অর্ণব আইচ: নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সামনে এল টেটের (TET) ‘প্রশ্নফাঁস’। পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র রাজ্যের কয়েকটি টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার অথবা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পৌঁছে যেত বলে অভিযোগ এসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) কাছে। সেই তথ‌্য যাচাই করছেন ইডি আধিকারিকরা। ওই ‘প্রশ্নফাঁস’-এর বিষয়টিও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) জানতেন বলে অভিযোগ। এদিকে, মানিকের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের ৩৫টি ব‌্যাংক অ‌্যাকাউন্টের উপর নজর ইডির। ওই ব‌্যাংকের অ‌্যাকাউন্টগুলিতে টাকার লেনদেন ইডি খতিয়ে দেখছে।

Advertisement

তাপসবাবুর বাড়ি থেকে আটটি মোবাইল উদ্ধার করেছেন ইডি আধিকারিকরা। ওই মোবাইলগুলি গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখেছেন। তাপসের সঙ্গে মানিকের হোয়াটস অ‌্যাপ (WhatsApp) চ‌্যাটগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ইডি আধিকারিকরা তাপস মণ্ডলের চারটি এনজিওর (NGO) খোঁজ পেয়েছেন। এ ছাড়াও সন্ধান মিলেছে বেশ কয়েকটি সংস্থার। ওই এনজিও ও বেসরকারি সংস্থাগুলির মাধ‌্যমে প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তদন্ত চলাকালীন ইডি উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটের একটি বহুতলের ফ্ল‌্যাটের সন্ধান পায়, যেটির মালিক বীরভূমের নলহাটির তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারী। তাঁর কাছ থেকে তাপস মণ্ডল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন‌্য ফ্ল‌্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন বলে খবর। আবার বীরভূমে বিভাসবাবুর একাধিক বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা বিএড (B.Ed) কলেজ আছে বলে খবর পেয়েছে ইডি। সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য বিভাস অধিকারীকে ইডি সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের দপ্তরে তলব করেছে। 

[আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপির নয়া কোর কমিটি গড়লেন নাড্ডা, নতুন দায়িত্বে মিঠুন, লকেট, অগ্নিমিত্রা, রাহুল]

এদিকে, টেট দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে আগেই ইডি জানতে পেরেছিল যে, জালিয়াতির আঁতুড়ঘর হচ্ছে কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় থাকা বেশ কিছু শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সম্প্রতি তদন্ত চলাকালীন ইডি আধিকারিকদের কাছে খবর আসে যে, টেট পরীক্ষার আগে প্রশ্নফাঁস হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছে যে, মানিক ভট্টাচার্যর মদতেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই পৌঁছে যেত প্রশ্ন ও উত্তরপত্র। তার আগে ওই কেন্দ্রের কর্মকর্তারা প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিতেন। তার বদলে ওএমআর শিটগুলি সঠিক উত্তর লিখে ভরাট করানোর ব‌্যবস্থা করা হত। এই তথ‌্যগুলিও ইডি যাচাই করছে। তার জন‌্য যে ‘ভুয়ো’ শিক্ষকদের তালিকা তৈরি হয়েছে, তাঁদের জেরা করা শুরু করছেন ইডির গোয়েন্দারা।

[আরও পড়ুন: কেদার-বদ্রী দর্শনে প্রধানমন্ত্রী, এবারের দীপাবলি কাটাবেন উত্তরাখণ্ড সীমান্তে সেনাদের সঙ্গে]

অন‌্যদিকে, বাম আমলে মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের চিটফান্ডের কারবার ছিল বলে খবর পেয়েছেন গোয়েন্দারা। অভিযোগ উঠেছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় ‘মিনার্ভা ফিনান্স’ নামে একটি চিটফান্ড সংস্থা তৈরি করে তিনি আমানতকারীদের মোটা টাকা সুদের টোপ দিয়ে অন্তত তিন কোটি টাকা হস্তগত করেন। ওই সময় তিনি বাম দলের সদস‌্যও ছিলেন। এমনকী, বাম আমলের দমকলমন্ত্রীর সঙ্গে ভাল যোগাযোগ থাকার সুবাদে টাকা নিয়ে অনেক পরিচিতকে দমকল বিভাগে চাকরিরও ব‌্যবস্থা করে দেন বলে অভিযোগ। চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারও হন তাপস। সম্প্রতি তাপসের ভাইয়ের স্ত্রী হাই কোর্টের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষিকার চাকরি খুইয়েছেন। ভাইয়ের স্ত্রী পারমিতার একটি শিক্ষক ট্রেনিং কলেজ রয়েছে। সেখান থেকেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছে ইডি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement