দীপঙ্কর মণ্ডল: কোনও সরকারি শিক্ষাঙ্গনের শীর্ষপদেই রাজনীতিবিদদের নিয়োগ বাঞ্ছনীয় নয়। ওই পদগুলিতে চায় শিক্ষাবিদদেরই। রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে (Chief Ministers) নিয়োগের বিরোধিতা করে এবার বিবৃতি দিলেন বিশিষ্টদের একাংশ। শুধু রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মুখ্যমন্ত্রীকে উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ নয়, কেন্দ্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে প্রধানমন্ত্রীকেও (Prime Minister) চান না তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, আচার্য পদে রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক প্রধান বসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকার ভঙ্গ হবে।
এই বিবৃতিতে নাম রয়েছে নাট্যকার এবং নির্দেশক বিভাস চক্রবর্তী, অভিনেতা কৌশিক সেন (Kausik Sen), চিত্রপরিচালক অনীক দত্ত, চিত্রশিল্পী সমীর আইচদের। বেশ কয়েকজন প্রাক্তন উপাচার্য, প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষাবিদেরও নাম রয়েছে বিবৃতিতে। নাম রয়েছে শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার (Miratun Nahar), মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্রদেরও। কয়েকজন বিশিষ্ট চিকিৎসকও এই বিবৃতির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।
[আরও পড়ুন: জেলে রাত কাটিয়ে গালাগাল ভুললেন রোদ্দুর রায়! পুলিশকে শেখাচ্ছেন ‘মোক্সাবাদ’]
শিক্ষাবিদ এবং বিশিষ্টদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর যে সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভা গ্রহণ করেছে তাতে আমরা বিস্মিত, স্তম্ভিত। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদকে নিয়োগের দীর্ঘদিনের যে দাবি রাজ্যের বিদ্বজ্জন ও শিক্ষাপ্রেমী নাগরিকরা উত্থাপন করছিলেন তাকে অস্বীকার করা হল। পঠন-পাঠন ও জ্ঞানচর্চার মুক্ত বিকাশের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকারের প্রয়োজন।” শিক্ষাবিদদের অভিযোগ, “কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা প্রশাসনিক প্রধান যদি সেই পদে আসীন হন তাহলে প্রতিমুহূর্তে শিক্ষায় রাজনৈতিক বা সরকারি হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা থেকে যাবে। তাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হয়ত রক্ষিত হবে, কিন্তু তা হবে বাধামুক্ত সারস্বতচর্চার স্বার্থের বিনিময়ে।”
[আরও পড়ুন: এসব বরদাস্ত করা হবে না, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, হাওড়ার হিংসা রুখতে কড়া বার্তা মমতার]
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আনার প্রস্তাব দিয়েছে। রাজ্য মন্ত্রিসভায় সেই প্রস্তাব ইতিমধ্যেই পাশ হয়ে গিয়েছে। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই সেই প্রস্তাব পাশ হওয়ার কথা। তার আগেই প্রস্তাবের বিরোধিতায় সরব বিশিষ্টদের একাংশ।