স্টাফ রিপোর্টার: আটক হওয়া বিপুল পরিমাণ সুপুরি ছাড়ানোর জন্য শুল্ক দপ্তরের নাম করে ৩৫ লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ। এই ব্যাপারে শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিন ব্যবসায়ী। তাঁদের অভিযোগ, এই চক্রে অন্তত পাঁচজন রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে একজন নিজেকে কোস্ট গার্ডের আধিকারিক ও অন্যজন নিজেকে শুল্ক দপ্তরের কর্তা বলে পরিচয় দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত মার্চ মাসে ব্যবসায়ীরা বড়বাজার ও বজবজ থেকে কেনা বেশ কয়েক বস্তা সুপুরি দু’টি মাছের ট্রলারে তোলেন। সেগুলি দক্ষিণ ২৪ পরগনার পেটুয়াঘাট থেকে তুলে গভীর সমুদ্রের দিকে রওনা দেন মৎস্যজীবীরা। উপকূলরক্ষী বাহিনী ওই ‘বেআইনি’ সুপুরি আটক করে শুল্ক দপ্তরের হাতে তুলে দেয়। শুল্ক দপ্তর ২৪ জন মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীকালে ওই ট্রলার ও ধৃত মৎস্যজীবীদের মোবাইল ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের জানানো হয়, ওই সুপুরি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে এক ব্যক্তি নিজেকে শুল্ক দপ্তরের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করেন। তাঁর মাধ্যমে আরও তিনজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁরা ব্যবসায়ীদের বলেন, শুল্ক দপ্তরের গোডউনে সুপুরি রাখা আছে। ৪২ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে তা ফেরত পাওয়া যেতে পারে। দরাদরিতে সেই ঘুষের পরিমাণ ৩৫ লাখ টাকায় নেমে আসে। এক্সাইড মোড়ের কাছে একটি রেস্তোরাঁয় প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এর পর নীল আলো লাগানো একটি গাড়ির ভিতর একটি বস্তায় পুরো ব্যবসায়ীরা ৫০ হাজার টাকার ৬০টি বান্ডিল দেন। তার বদলে এক শুল্ক কর্তার চিঠির কপি তাঁদের দেওয়া হয়।
তাঁদের বলা হয়, ওই সুপুরি একটি ট্রাকে ভরা হচ্ছে। সেগুলি তাঁদের কাছে পৌঁছে যাবে। কিন্তু টাকা দেওয়ার পর আর তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এরপর খোঁজখবর নিয়ে ব্যবসায়ীরা জানতে পারেন, তাঁদের সঙ্গে প্রথমে যে ব্যক্তি যোগাযোগ করেছিল, সে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশের হাতে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে। ক্রমে সেই সুপুরি ও টাকা কোনওটাই ফেরত না পেয়ে ব্যবসায়ীরা শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যে শুল্ককর্তার বিরুদ্ধে তঁাদের অভিযোগ, তিনি চেন্নাইয়ে বদলি হয়েছেন বলে খবর। ওই কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকরা সতি্যই এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত, না কি তঁাদের নাম করে পুরো টাকা হাতানো হয়েছে, তা জানার চেষ্টাহচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
