অর্ণব আইচ: খুব কম সময়ের মধ্যে কলকাতা থেকে দিল্লি, সেখান থেকে রাজস্থান। এতগুলো জায়গা ঘুরেও শেষরক্ষা হল না। পুলিশ তার হদিশ পেয়েছে, তা জানতে পেরে আত্মসমর্পণ করে সংসদে গ্যাস হামলার (Gas Attack in Parliament) মূল চক্রী হিসেবে চিহ্নিত ললিত ঝা। গোটা অপারেশনের বিস্তারিত জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। ললিত সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে দিল্লি পুলিশের (Delhi Police) একটি টিম পৌঁছেছে কলকাতায়। রয়েছেন ২ উচ্চপদস্থ আধিকারিক। সূত্রের খবর, তাঁরা প্রথমে হালিশহরে যাবেন। ১৩ তারিখ হামলার পর প্রথম ভিডিওটি ললিত যাকে পাঠিয়েছিল, সেই নীলাক্ষ আইচের বাড়ি হালিশহরে। তাঁকেই প্রথম জেরা করতে চায় দিল্লি পুলিশ। যেতে পারে ললিতের বাগুইআটিতে (Baguati) ডেরাতেও। এছাড়া ললিত যে NGO-র সঙ্গে যুক্ত, তারা মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিন দিল্লি পুলিশ তাকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ললিতের মা-বাবার বিহার (Bihar) যাওয়ার কথা ছিল। মা-বাবাকে সেখানে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ললিতকে দেন তাঁর দাদা শম্ভু ঝা। সেইমতো ১০ তারিখ ললিত মা-বাবাকে নিয়ে ট্রেনে তুলে দিয়ে বাগুইআটির বাড়িতে ফিরে আসে। এর পর ১১ তারিখ ললিত নিজে দিল্লি চলে যায়। সংসদে ঢুকে প্রতিবাদ জানানোর পরিকল্পনা নিয়ে তাদের চূড়ান্ত বৈঠক ছিল ১২ তারিখ। দিল্লিতে বসেই বাকিদের নিয়ে তার আলোচনা সেরে নেয় ললিত। এর পর ১৩ তারিখ লোকসভায় ঢুকে গ্যাস হামলা চালায় তারা।
[আরও পড়ুন: যৌন হেনস্তার শিকার খোদ বিচারক! সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি]
এদিকে, ললিতের খোঁজ পেতে তাঁর দাদা শম্ভুকে জেরা শুরু করেন তদন্তকারীরা। তাঁর থেকে তথ্য মেলে। সংসদের হামলার পর ললিত নিজে দিল্লি থেকে পালিয়ে যায় রাজস্থানে (Rajasthan)। রাজস্থানের বাসিন্দা মহেশ নামে এক যুবক ললিতের বন্ধু। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন ললিত। ওই মহেশই তাঁকে রাজস্থানে হোটেল ভাড়ার বন্দোবস্ত করে দেন। সেখানে গিয়ে হামলার পর প্রমাণ লোপাটে নিজের এবং অন্যদের মোবাইল পুড়িয়ে দেয়। সেই বন্ধু মহেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী দল মহেশের উপর চাপ দিতে থাকে, ললিতকে আত্মসমর্পণের জন্য। ললিতকে বোঝানো হয়। এর পর সে রাতে আত্মসমর্পণ করে।
[আরও পড়ুন: এখনই স্বস্তি নয়, সুপ্রিম কোর্টে মহুয়ার মামলার শুনানি সেই জানুয়ারিতে]
ললিত যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, তারা কলকাতা ছাড়াও পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করে। ওই সব এলাকায় একসময়ে মাওবাদী (Maoist) প্রভাবিত ছিল। এখনও NGO-র আড়ালে মাওবাদী কার্যকলাপ চলছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। যে ধাঁচে সংসদে হামলা হয়েছে, তাতে এই সন্দেহ উসকে উঠেছে।