দিপালী সেন: গ্রিফিন্ডর, স্লিদারিন, রেভেনক্ল ও হাফলপাফ। আট থেকে আশি-প্রায় সকলেরই হ্যারি পটারের (Harry Potter) দুনিয়ার হগওয়ার্টস জাদুস্কুল ও সেখানে পড়ুয়াদের চারভাগে ভাগ (হাউস) করার কথা কমবেশি জানা। এবার পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের সামগ্রিক বিকাশের লক্ষ্যে বাংলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলিতেও প্রায় একই রকম ব্যবস্থা চালুর নীতি গ্রহণ করেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। শুধু ‘হাউজ ব্যবস্থা’ নয়। সঙ্গে পড়ুয়াদের আরও চারটি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত রাখার নীতি নেওয়া হয়েছে। শনিবারই কার্যকলাপগুলি পরিচালনা সংক্রান্ত বিস্তারিত গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টরের তরফে।
হগওয়ার্ট-এর হাউসগুলির নামকরণ করা হয়েছিল জাদুস্কুলের চার প্রতিষ্ঠাতার পদবির নামে। প্রায় একই পথ অনুসরণ করে স্কুলের হাউসগুলির নামকরণ করতে বলা হয়েছে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন এমন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব তথা মনীষীদের নামে। জেলাভিত্তিক নির্দিষ্ট কমিটির অনুমোদনেই চূড়ান্ত করা হবে হাউসের নাম। গাইডলাইন অনুযায়ী, প্রতিটি হাউস শিক্ষক পদের একজন হাউস মাস্টার বা মিস্ট্রেসেস-এর নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তিনি স্কুলের অন্য হাউসগুলির সঙ্গে সংযোগ রাখবেন। তাতে উঁচু শ্রেণির একজন করে পড়ুয়া ক্যাপ্টেন হবে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে প্রত্যেক পড়ুয়াকে হাউজ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। হাউসগুলি নিজেদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের মানসিক বিকাশ ও বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেবে। শিক্ষা, খেলাধুলা, সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি ও অন্যান্য কার্যাবলির ভিত্তিতে প্রতি বছর সেরা হাউস ঘোষণা করবেন প্রধান শিক্ষক। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গোটা ব্যবস্থার মধ্যেই যে হগওয়ার্ড জাদুস্কুলের ব্যবস্থার ছাপ রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
[আরও পড়ুন: বউবাজারের বাড়িতে ফাটল: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনাস্থলে ফিরহাদরা, বাসিন্দাদের অর্থসাহায্যের ঘোষণা]
শিশু অবস্থাতেই ব্যক্তিত্বের উন্নতির লক্ষ্যে স্কুলে থাকবে ‘শিশু সংসদ’ গঠনের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি সংসদীয় ব্যবস্থায় থাকবে মন্ত্রিসভাও। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পানীয় জলের দায়িত্বে পিএইচই মন্ত্রী, কিচেন গার্ডেন ও মিড-ডে মিলের তত্ত্বাবধানে খাদ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী-সহ আরও নানা মন্ত্রী। এছাড়া, সপ্তাহের কোনও একদিন প্রতিটি শ্রেণিতে শেষ ক্লাসে ‘আনন্দ পরিসর’ হবে। সেখানে বিভিন্ন সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি, কোনও বিষয় নিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষকের আলোচনা হবে।
পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের পাঠ্যক্রমের বাইরে বই পড়ার জন্য উৎসাহ দিতে হবে। প্রতি বছর ২ জানুয়ারি বই বিতরণের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট করা রয়েছে। ওইদিন বা তারপরে সেই বছর এক শ্রেণি থেকে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত তথা উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের স্বীকৃতি দিতে অনুষ্ঠান করবে স্কুল।