দীপালি সেন: ফের প্রশ্নপত্রে ‘আজাদ কাশ্মীর’ বিতর্ক। এবার নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (ABTA) ও পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (WBTA) টেস্ট পেপারে একই প্রশ্ন। ‘আজাদ কাশ্মীর’ কী? দুটি টেস্ট পেপারেই ২ নম্বরের নির্ধারিত প্রশ্ন এটি। বিষয়টি নজরে আসার পর শোরগোল শুরু হতেই নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিয়েছে এবিটিএ। আর পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির তরফে বাজার থেকে টেস্ট পেপারটি তুলে নেওয়া হয়েছে বলে খবর। যদিও কেন এহেন প্রশ্ন করা হয়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে দুই সংস্থার তরফে। এর আগে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের টেস্ট পেপারে ‘আজাদ কাশ্মীর’ প্রসঙ্গে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। পর্ষদ ব্যবস্থাও নিয়েছিল।
গত সপ্তাহে মাধ্যমিকের টেস্ট পেপারে ইতিহাসের প্রশ্নে ম্যাপ পয়েন্টিংয়ে ‘আজাদ কাশ্মীর’-এর (Azad Kashmir) উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছিল মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির। প্রধান শিক্ষক স্বামী তপহারানন্দ মহারাজজির বক্তব্য ছিল, “ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে আজাদ কাশ্মীর বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। সেই সরকারি পাঠ্যপুস্তক থেকেই মানচিত্রে জায়গাটি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।” ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE)। পর্ষদের আইন অনুযায়ী প্রত্যেককে ‘লিখিত সতর্কীকরণ’ পাঠানো হয়।
[আরও পড়ুন: বাম পরিবারের ছেলে প্রভাবশালী TMC নেতা, ‘পরোপকারী’ কুন্তলের গ্রেপ্তারি মানতে নারাজ প্রতিবেশীরা]
সেই বিতর্কের আঁচ নিভতে না নিভতেই এবিটিএ, ডব্লুবিটিএ-র টেস্ট পেপারেও সেই একই প্রশ্ন। সেখানে অবশ্য ম্যাপ পয়েন্টিং নয়, ২ নম্বরের প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে – আজাদ কাশ্মীর কী? এনিয়ে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়েছে।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (ABTA) সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, ‘‘আজাদ কাশ্মীর কী? ২০১৮ সালের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বইতে তার উল্লেখ আছে। বইগুলোকে অনুমোদন দেয় পর্ষদ। তাহলে পর্ষদের বইয়ের মধ্যে যদি এরকম ত্রুটি থাকে, তাহলে কোনও প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন করতেও অসুবিধা থাকার কথা নয়। আজাদ কাশ্মীর পাকিস্তানের ভাষা। আমাদের ভাষা ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর’। এইসব বইয়ের মধ্যেই ত্রুটি আছে। যিনি প্রশ্ন করেছেন তিনি ওটা দেখে করেছেন। তবুও প্রশ্নপত্র করার ক্ষেত্রে এটা এড়িয়ে যেতে পারলেই ভাল ছিল।’’
সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘পর্ষদের টিবি নম্বর দেওয়া বইয়ে আছে। সেক্ষেত্রে আজাদ কাশ্মীর কী, বইয়ে থাকা তথ্য অনুযায়ী এই প্রশ্ন করলে ভুল কিছু নয়। তবু আমরা মনে করি এই ধরনের বিতর্কিত, সংবেদনশীল বিষয়গুলি যতটা সম্ভব পরিহার করে চলা যায়, তত ভালো। আমরা সেই বার্তাটাই দিয়েছি। সরকারের কাছেও প্রশ্ন, বইয়ের মধ্যে আজাদ কাশ্মীরের মতো ভাবাবেগের মতো বিষয়গুলো কেন থাকবে?’’ একই বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (WBTA) সাধারণ সম্পাদক তপনকুমার রায়েরও।