রমেন দাস: ফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার মৃত্যুতে শুরু বিতর্ক। অভিযোগ, মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের ফলেই আত্মহত্যা করেছেন ওই ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয় জলপাইগুড়ির মালবাজারে। ওই ছাত্রীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। তারপরেই শুরু হয় বিতর্ক। দৃষ্টিহীন ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে জড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র এবং এক গবেষকের নাম।
এবার সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই জরুরি বৈঠকের ডাক দিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ওই বৈঠকে থাকবেন রেজিস্ট্রার, ডিন অফ স্টুডেন্টস-সহ একাধিক আধিকারিকরা। ওই বৈঠকেই মৃত ছাত্রীর বাবার করা অভিযোগের ভিত্তিতে আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু গত বছরের আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে বাংলা বিভাগের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর পর ফের এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযোগ, ওই ছাত্রীর বাবা গত ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্র এবং বাংলা বিভাগের এক গবেষক মিলে তাঁর মেয়েকে শারীরিক, মানসিক অত্যাচার করত। যে কথা মৃত্যুর আগে পরিবারকে ওই ছাত্রী জানিয়েছিলেন বলেও দাবি। এমনকী জোর করে ওই ছাত্রীকে নেশা করানোর অভিযোগও উঠেছে।
এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে জানান, ”আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। কষ্ট হচ্ছে। আমাদের এবার ঠিক কী করণীয়, বুঝতেও সময় লাগছে! সেদিন (মেইন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যু) এক ছাত্রের মৃত্যু হল। এই জিনিস বারবার হওয়া তো ঠিক নয়! অভিযোগ পেয়েছি ওই ছাত্রীর বাবার তরফে। ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকে বসছি আমরা। সেখানেই ঠিক হবে পরবর্তী পদক্ষেপ। খুব খারাপ লাগছে।”
[আরও পড়ুন: কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতিদের সংঘাত, মেডিক্যাল মামলা নিজের হাতে নিল সুপ্রিম কোর্ট]
যদিও এই ঘটনার পর সরব হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র সংগঠন। মৃত ছাত্রীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দাবি, এই ঘটনায় উপযুক্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে কর্তৃপক্ষকেও। ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষকে ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ছাত্র সংগঠন এফএসডি-র তরফেও দৃষ্টিহীন ছাত্রীর মৃ্ত্যুতে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়েছে। ওই সংগঠনের আহ্বায়ক আনিকুলের দাবি, ”আমাদের সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। যাঁদের নাম এই ঘটনায় জড়িয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আসল সত্য প্রকাশিত হোক। এর মধ্যে ঠিক কী ছিল, এটাও জানা জরুরি। কর্তৃপক্ষকে বলেছি, ব্যবস্থা নিন তাঁরাও।” আনিকুলের সুরে একই দাবি জানিয়েছেন বাকি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। অন্যদিকে মালবাজার থানার তরফেও শুরু হয়েছে ওই পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত।