রমেন দাস: ১৭তম দিনে আমরণ অনশন প্রত্যাহার করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কলকাতার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অনশনকারী চিকিৎসকেরাও অনশনের পথ থেকে সরলেন। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে ফেরার পরই এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দেবাশিস হালদার। আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার রাজ্যে সর্বাত্মক স্বাস্থ্য ধর্মঘটের রাস্তা থেকেও সরে এসেছেন তাঁরা। তবে আন্দোলনের 'রাজপথ' ছাড়ছেন না। শনিবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মহা গণকনভেনশনের ডাক দিয়েছেন কিঞ্জল-অনিকেত-দেবাশিসরা।
এদিন নবান্নের সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী, প্রশাসনিক কর্তাদের ২ ঘণ্টা বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তারদের ১৭ প্রতিনিধি। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। যুক্তি, পালটা যুক্তিতে সরগরম ছিল নবান্ন সভাঘর। সেই বৈঠক সম্পর্কে আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার বলেন, "প্রশাসনের শরীরী ভাষা আমাদের পজিটিভ লাগেনি। আমাদের we want justice-এর ব্যাচ পরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমরা জানি সবই তিনি জানেন। মিটিং-এ সন্তুষ্ট নই।" এমনকী, থ্রেট কালচার নিয়ে আলোচনার সময় মুখ্যমন্ত্রী 'হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছেন' বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, ""আমরা থ্রেট কালচার নিয়ে কথা বলেছি। মুখ্যমন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছেন, আমাকে জানিয়ে কেন মনিটরিং কমিটি গঠন করা হল না? যাঁরা সেখানে ছিলেন, এমনকি, আর জি করের অধ্যক্ষকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের রীতিমত থ্রেট দেওয়া হয়েছে। গোটাটাই আইওয়াশের ঘটনা।স্বাস্থ্যসচিবকে নিয়ে আমাদের কথা শোনা হয়নি।" তার পরেও কেন আমরণ অনশন প্রত্যাহার করলেন তাঁরা?
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অনশন প্রত্যাহার।
প্রশ্নের জবাবে দেবাশিস জানান, "অভয়ার বাবা-মা এসেছেন অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে। অভয়ার বাবা, মা এসেছেন তাঁরা বার বার বলছেন, আর কোনও সন্তান হারাক, তাঁরা চান না। অনশনে কারও ক্ষতি হোক, তাঁরা চান না। সাধারণ জনগণ আমাদের পাশে আছে। আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রতিজ্ঞা রাখছি। সম্মান রেখে, আমাদের লড়াইকে আরও তীব্রতর করার অঙ্গীকার রেখে প্রত্যাহার করছি।" সঙ্গে জানান, মঙ্গলবারের স্বাস্থ্য ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হল। তবে শনিবার আর জি কর হাসপাতালে মহা কনভেনশন ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
অনশনভঙ্গ করার পর অনশনকারীদের শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ধর্মতলা মঞ্চে থাকা অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল।