সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে 'থ্রেট কালচার' নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার নবান্নের বৈঠকে আরও একবার উঠল হুমকি সংস্কৃতির প্রসঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সামনে বসেই সরাসরি বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ও অভীক দে-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার। তবে তাঁকে থামিয়ে দেন মমতা।
বৈঠকে দেবাশিসের কথার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘উপস্থিত নেই যখন, নাম নেবেন না। নাম নিলে তো তাঁকেও তাঁর কথা বলার জায়গা দিতে হয়। ’’এর পরই আলোচনার বিষয় বদলে দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের সুবিচার-সহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। ধর্মতলার বুকে ১৬ দিন ধরে চলছে অনশন। দাবিদাওয়া পূরণ না হলে অনশন চালিয়ে যাওয়া এবং মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
ফলে স্বাস্থ্য-জট কাটাতে সোমবার জুনিয়র ডাক্তারদের আলোচনার জন্য নবান্নে ডাকা হয়। বার বার অনশন প্রত্যাহার করে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই মর্মে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের তরফ থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে ই-মেলও পাঠানো হয়। তবে তা সত্ত্বেও ‘শর্ত’ না মেনেই সোমবার বিকেলে নবান্নের হাইভোল্টেজ বৈঠকে যোগ দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রয়েছেন রাজ্যের দশটি মেডিক্যাল কলেজের সুপার ও প্রিন্সিপালরাও। হচ্ছে বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিংও। ধর্মতলায় বসে এই লাইভ স্ট্রিমিংয়ে চোখ রেখেছেন অনশনকারীরা।
উল্লেখ্য, আর জি কর ঘটনার আবহে ভাইরাল ‘হুমকি’র অডিওকে কেন্দ্র করে চর্চায় এসেছিলেন বর্ধমান মেডিক্যালের প্যাথোলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। শোনা যাচ্ছিল, ৯ আগস্ট সকালে অর্থাৎ তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিন নাকি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেমিনার হলে উপস্থিত ছিলেন বিরূপাক্ষ। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। শোনা যায়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নাকি চলত তাঁর ‘দাদাগিরি’, ‘থ্রেট কালচার’।
এছাড়া ২০২১ সালে জলঙ্গি থানায় ডাক্তার বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কেপিসি মেডিক্যালে ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রের ভর্তির জন্য টাকা তোলার অভিযোগও ওঠে। মামলার জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টেও। বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন বিরূপাক্ষ। এছাড়া সন্দীপ ঘোষ ‘ঘনিষ্ঠ’ আরেক চিকিৎসক অভীক দে-র বিরুদ্ধেও উঠেছিল ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল সাসপেন্ড করে দুজনকেই।