অর্ণব আইচ: বন্দুক দেখিয়ে সিঁথি এলাকা থেকে ৩ কোটি টাকার সোনা লুটের ঘটনায় বড় সাফল্য। ভিন রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার আগেই পুলিশের জালে প্রাক্তন কর্মী! ধৃত ওই ব্যক্তির নাম সইদুল মণ্ডল। বুধবার রাতে হুগলির খানাকুল থেকে গ্রেপ্তার তাকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ডাকাতি দমন শাখার আধিকারিকরা। তবে বড়সড় এই ডাকাতির ঘটনায় সইদুল একা নয়, আরও বেশ কয়েকজন জড়িত আছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। আর তাই বাকিদের খোঁজ পেতে ধৃতকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় পিস্তল দেখিয়ে এক স্বর্ণকারের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকার সোনা লুটের ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে উত্তর কলকাতার সিঁথি থানা এলাকায়। পুলিশ জানায়, সিঁথি এলাকার রাজা অপূর্ব কৃষ্ণ লেনে রয়েছে ওই স্বর্ণকারের ওয়ার্কশপ। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বড়বাজারে আসেন। কয়েকজন স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গয়না তৈরির জন্য তিনি প্রায় ৩ কোটি টাকা দামের ২ কিলো ৩৮০ গ্রাম সোনা সংগ্রহ করেন। রাতে স্কুটি করে সিঁথিতে ওয়ার্কশপের কাছে আসামাত্রই দুই ডাকাত তাঁর সামনে আসে। পিস্তল দেখিয়ে স্কুটির ভিতর থেকে ৩ কোটি টাকার সোনা ডাকাতি করে। স্বর্ণকারকে মারধরের পর তাঁর স্কুটিও লুঠ করে। শুধু তাই নয়, সেই স্কুটি চড়েই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
এরপরেই স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নামে লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখার গোয়েন্দারা। তদন্তে নেমেই বিভিন্ন জায়গায় লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। স্কুটিটি নিয়ে কোন পথে ডাকাত দল চম্পট দিয়েছে তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেন আধিকারিকরা। ওই ফুটেজ খতিয়ে দেখার সময়েই একটি জায়গায় সইদুল মণ্ডলকে দেখতে পান গোয়েন্দারা। দেখা যায়, আড়ালে দাঁড়িয়ে সমস্ত নির্দেশ দিচ্ছে সে। পরিচয় জানতে গিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন ওই স্বর্ণকারের ওয়ার্কশপে একটা সময় কাজ করত সে। এরপরেই সইদুল মণ্ডলের লোকেশন ট্র্যাক করতে শুরু করে ডাকাতি দমন শাখার গোয়েন্দারা।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সইদুল মণ্ডলের বাড়ি হুগলির খানাকুল এলাকায়। এরপরেই গোপন সূত্রে বুধবার রাতে সেখানে হানা দেন লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখার গোয়েন্দারা। একেবারে হাতেনাতে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সইদুলকে। পুলিশের দাবি, একেবারে গ্যাং বানিয়ে পরিকল্পনা করে এই ডাকাতির ঘটনা সংগঠিত করেন সইদুল। শুধু তাই নয়, ঘটনার পরেই ভিনরাজ্যে তাঁর পালিয়ে যাওয়ার ছক ছিল বলেও জানতে পেরেছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
