বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ইতিহাসে প্রথমবার যৌথভাবে ব্রিগেডে জনসভা ডেকেছে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস (Congress)। বামেরা ইতিমধ্যেই সেই সভার প্রচারও শুরু করে দিয়েছে জেলায় জেলায়। দেওয়াল লিখন, পোষ্টার, ব্যানারে ছেয়ে ফেলা হচ্ছে গোটা রাজ্য। সব মিলিয়ে বাম শিবিরে এই মুহূর্তে ব্রিগেড নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, কংগ্রেস শিবিরে ছবিটা একেবারেই উলটো। বামেরা প্রচার শুরু করলেও কংগ্রেস এখনও ব্রিগেডের প্রচারের প্রস্তুতিও শুরু করতে পারেনি। তার কারণ হল, ব্রিগেডের ওই মেগা জনসভায় রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা।
বাম (Left Front) এবং কংগ্রেসের জোট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়েই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, এবারে আর ষোলোর আগের মতো আসন সমঝোতা করে নয়, বরং জোট হবে পুরোদস্তুর জোটের মতোই। সেই লক্ষ্যেই এবার ব্রিগেডে যৌথ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাম এবং কংগ্রেস। সেই সভায় মধ্যমণি হিসেবে রাহুল গান্ধীকে চাইছে জোট নেতৃত্ব। সেই মতো প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধীর কাছে সময় চেয়ে অনুরোধও করা হয়েছে। কংগ্রেসের এরাজ্যের পর্যবেক্ষক তথা এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক জিতিন প্রসদার (Jitin Prasda) হাত দিয়ে রাহুলকে ব্রিগেডের সভায় আসার জন্য অনুরোধের চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, সংসদের অধিবেশন চলাকালীন অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) নিজে রাহুলের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে ব্রিগেডের সভায় আসতে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু এখনও রাহুলের তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি এখনও ব্রিগেডের সভায় আসার ব্যাপারে কোনও সবুজ-সংকেত দেননি। যার ফলে রীতিমতো ধন্দে প্রদেশ নেতারা। বামেরা যেমন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে মধ্যমণি হিসেবে তুলে ধরে ব্রিগেডের প্রচার শুরু করেছে, কংগ্রেস সেটা করতে পারছে না। অথচ, প্রদেশ কংগ্রেস এখনও রাহুলকে মধ্যমণি হিসেবে তুলে ধরে প্রচারে যেতে পারছে না। ফলে একপ্রকার বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে অধীর চৌধুরীদের।
[আরও পড়ুন: ‘অব্যাহতি চাই, দলকে জানিয়েছি’, এবার সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিতের]
বস্তুত, পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনকে মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই কেরল, তামিলনাড়ু এবং অসমে প্রচারাভিযান শুরু করে ফেলেছেন রাহুল। এমনকী, পুদুচেরিতেও বুধবার প্রচারে গিয়েছেন তিনি। ব্রাত্য শুধু বাংলা। যার ফলে প্রদেশ নেতৃত্বকে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কি কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা রাজ্যে জয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছেন? নাকি রাজ্যে এসে মমতার বিরুদ্ধে এখনই প্রচার করতে চাইছেন না গান্ধী পরিবারের সদস্যরা? যদিও প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের দাবি, শীঘ্রই দলের শীর্ষনেতারা রাজ্যেও প্রচারে আসবেন। আর ব্রিগেডে রাহুল না এলেও গান্ধী পরিবারের কোনও না কোনও সদস্য আসবেনই।