shono
Advertisement
RG Kar

ফাঁসিকাঠ কোনদিকে? জেলে প্রশ্ন 'অস্থির' সঞ্জয়ের

ফাঁসির সাজা সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে জেলের সকলকে জিজ্ঞাসা করছে সঞ্জয়।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:45 AM Jan 20, 2025Updated: 10:42 AM Jan 20, 2025

স্টাফ রিপোর্টার: সারারাত দু চোখের পাতা এক হয়নি। গলা দিয়ে নামেনি রাতের খাবারও। আজ যে সাজা ঘোষণা! ফাঁসি না যাবজ্জীবন? উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় অস্থির আর জি কর ধর্ষণ-খুন মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়। শনিবার থেকেই বাড়তি পাহারার ব্যবস্থা হয়েছে সঞ্জয়ের সেলে। সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে সেই সেল। ওয়ার্ডের সিপাই তো রয়েছেনই, তার উপর নজর রাখার অন্য বহাল করা হয়েছে অতিরিক্ত সিপাই। ওয়ার্ডের জমাদারবাবু ছাড়াও ডেপুটি জেলারকে মাঝেমধ্যেই সঞ্জয়ের সেল পরিদর্শন করতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক সঞ্জয়কে দোষী ঘোষণা করে রায় দেওয়ার পর থেকেই জেল কর্তৃপক্ষের তৎপরতা তুঙ্গে। নিয়ম মেনে যা যা করা উচিত, সব ব্যবস্থা করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাতে ডাক্তার তার শারীরিক পরীক্ষা করে গিয়েছেন। রবিবার সকালেও হয়েছে স্বাস্থ্যপরীক্ষা। জানা গিয়েছে, রাতে একটু বাড়লেও পরের দিকে সঞ্জয়ের রক্তচাপ স্বাভাবিকই ছিল। হৃৎস্পক্ষন একটু ওঠানামা করেছে। কিন্তু মোটের উপর কোনও শরীরিক সমস্যা দেখা যায়নি। তবে মন জুড়ে যে প্রবল উদ্বেগ-উত্তেজনা রয়েছে, তার ছাপ পড়েছে চোখেমুখে। শনিবার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সে কাঠগড়া আঁকড়ে ছিল। পুলিশকর্মীরা জোর করায় ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রবিবার অবশ্য দিনভর নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছে সঞ্জয়।

সিপাই থেকে শুরু করে ডেপুটি জেলার, সামনে যাকেই পেয়েছে সঞ্জয় জানার চেষ্টা করেছে, রায় হওয়ার কতদিন পর ফাঁসি কার্যকর হয়, কোথায় কোথায় ফাঁসির বিরুদ্ধে আবেদন জানানো যায়, এমনকী ফাঁসিকাঠ কোনদিকে, তাও কারারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করেছেন। যদিও রক্ষীর কেউই এই ব্যাপারে কথা বলছেন না, পাছে উত্তেজনা বেড়ে গিয়ে সঞ্জয়ের শরীর খারাপ হয়। তবে ফাঁসি হবে ধরে নিয়েই যে সঞ্চয় দিন গুনতে শুরু করেছে তা একপ্রকার স্পষ্ট। আর তো মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তারপরই রায় শোনাবেন বিচারক। শনিবারই বিচারক জানিয়ে দিয়েছিলেন, ''সব সাক্ষীদের ফেরা করে ও সিবিআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে যা মনে হয়েছে, তাতেই আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। শাস্তি আপনাকে পেতে হবে। কী শান্তি হবে, তা সোমবার জানানো হবে। সোমবার আপনার কথাও শুনব।" এই কথাগুলোই প্রতিধ্বনিত হয়েছে সঞ্জয়ের মনে। রাতে বিছানা ছেড়ে ধড়ফড় করে উঠে বসেছেন। রবিবার দুপুরের খাবারও পুরোটা খায়নি সঞ্জয়। শুধু জল খেয়ে গলা ভেজানোর চেষ্টা করেছেন।

জানা গিয়েছে, সঞ্জয়ের ফাঁসির হুকুম হলে আরোপিত হবে আরও বিধি-নিষেধ। আরও নিয়ম-নীতির নিগড়ে বেঁধে ফেলা হবে তাকে। ডাক্তারি পরীক্ষা আরও জোরদার করা হবে। সঞ্জয় যে ওয়ার্ডে আছে, তার ঠিক পিছনে রয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলের ফাঁসির মঞ্চ। যদিও স্বাধীনতার পর থেকে সেই ফাঁসিকাঠে কারও ফাঁসি হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ ফাঁসির মঞ্চটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করছে। পরিষ্কার রাখছে। নিত্য পুজোও হচ্ছে ফাঁসিকাঠে। এর আগে শেষ ফাঁসি হয়েছিল আলিপুর জেলে, ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের। ২০০৪ সালের ১৪ আগস্ট তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। ১৪ বছর বয়সী স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যার অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সরকারি ফাঁসুরে নাটা মল্লিক ফাঁসি দিয়েছিলেন। কুড়ি বছর আগের সেই স্মৃতি ঘুরেফিরে আসছে আর জি কর মামলার সাজা ঘোষণার আগে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আর জি কর মামলায় সোমবার সাজা ঘোষণা।
  • ফাঁসিকাঠ কোনদিকে? জেলে বসে জানতে চাইছে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়।
Advertisement