shono
Advertisement

Breaking News

RG Kar Case

মাল্টিপল পেনিট্রেশনের চিহ্ন মেলেনি! আর জি কর কাণ্ডে তথ্য দিয়ে গণধর্ষণের তত্ত্ব ওড়াল আদালত

আর কী রয়েছে আদালতের নির্দেশের কপিতে?
Published By: Tiyasha SarkarPosted: 12:55 PM Jan 22, 2025Updated: 02:17 PM Jan 22, 2025

অর্ণব আইচ: গণধর্ষণ হয়নি, আর জি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিল আদালত। নির্দেশের কপিতেই বিচারক স্পষ্ট জানিয়েছেন, নির্যাতিতার দেহে ‘মাল্টিপল পেনিট্রেশন’-এর কোনও প্রমাণ মেলেনি। যেকোনও গণধর্ষণের ঘটনায় এটাই ‘সিনে কোয়া নন’ বা অপরিহার্য শর্ত। তাই এই ব‌্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এই ঘটনাটি গণধর্ষণ নয়।

Advertisement

সোমবারই আর জি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) দোষী সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়েছে। প্রথম থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়, নির্যাতিতার উপর যৌন নির্যাতন একা কোনও ব‌্যক্তির নয়। কিন্তু সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার সময় এই দাবিগুলি উড়িয়ে দিয়েছে আদালত। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস তাঁর নির্দেশে জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী নির্যাতিতার যৌনাঙ্গের হাইমেন দু’ভাবে ছিঁড়ে যায়। কোনও বস্তু, যা ধাতব ও অমসৃণ নয়, এমন কিছু নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে প্রবেশ করালে। সেই বস্তুটি কোনও পুরুষের যৌনাঙ্গ বা কোনও শক্ত ও ভোঁতা বস্তুও হতে পারে। যখন নির্যাতিতার শরীরে বস্তুটি প্রবেশ করানো হয়, তখন তিনি জীবিত ছিলেন। তবে আদালতের মতে, ঘটনাস্থল থেকে এরকম কোনও বস্তু উদ্ধার করা হয়নি। সিবিআইয়ের সুপারিশে তৈরি হওয়া কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞদের টিম এমআইএমবি-র চেয়ারপার্সন সাক্ষ্যে আদালতকে জানান, ময়নাতদন্তের চিকিৎসকের মন্তব‌্যই সঠিক। সেই কারণে সঞ্জয় রায়ের আইনজীবীও এর বিরোধিতা করতে পারেননি।

সওয়ালে আদালতে জানানো হয় যে, নির্যাতিতার দেহ থেকে বীর্য বা সিমেনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এমনকী, নির্যাতিতার দেহে পুরুষের চুলও উদ্ধার হয়নি। একটি চুলের নমুনা উদ্ধার হয় কাঠের স্টেজ থেকে, যেখানে পড়ে ছিল নির্যাতিতার দেহ। ওই চুলের ছবি তুলেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে ফরেনসিক পরীক্ষা করে যে, সেটি সঞ্জয় রায়ের। ফলে সঞ্জয় যে দাবি করেছিল, তার শরীর থেকে চুল ছিঁড়ে তা নমুনা হিসাবে ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে, তা বিশ্বাসযোগ‌্য নয় বলে অভিমত আদালতের। আদালত জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের চিকিৎসক ও কেন্দ্রীয় টিমের বিশেষজ্ঞর মতামত অনুযায়ী, তাঁরা নিশ্চিত নন যে, নির্যাতিতার শরীরে কোনও পুরুষের যৌনাঙ্গ প্রবেশ করেছিল কি না। কিন্তু সিমেন উদ্ধার না হওয়ার বিষয়টি সেরকমই ইঙ্গিত দেয়। তবে কোনও শক্ত, ভোঁতা ও মসৃণ কোনও বস্তু নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে যে জোর করে প্রবেশ করা হয়েছিল, সেই ব‌্যাপারে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত। সেই কারণেই যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাত দেখে বিশেষজ্ঞদের মতামত, যৌনাঙ্গে প্রবেশের জন‌্য দায়ী মাত্র একজন ব‌্যক্তি। কারণ, তা প্রবেশ ও বের করানো হয়েছে একইভাবে। তাতেও ‘মাল্টিপল পেনিট্রেশন’বা অনেকে মিলে কোনও বস্তু নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে প্রবেশ করিয়েছে, সেরকম কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাই গণর্ধষণের ঘটনা এটি একেবারেই নয় বলে অভিমত আদালতের।

নির্যাতিতার মাথার অংশ ময়নাতদন্তের সময় মাথার পিছন দিকে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। আদালতের নির্দেশের কপি অনুযায়ী, ময়নাতদন্ত বিশেষজ্ঞ জানিয়ছেন, নির্যাতিতার মাথা শক্ত, কিন্তু অতি শক্ত নয় এমন কোনও জায়গায় ঠুকে দেওয়া হয়েছিল। সেই জায়গাটি কাঠের মেঝে, বেঞ্চ, চেয়ার হতে পারে। কিন্তু সেটা কোনও ধাতব জায়গা বা সিমেন্টের মেঝে নয়। এতে প্রমাণিত যে, নির্যাতিতা কাঠের স্টেজের উপর ম‌্যাট্রেস পেতে ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁর মাথা বেশ কয়েকবার ঠুকে দেওয়া হয়। কিন্তু ম‌্যাট্রেস থাকার ফলে সরাসরি মাথা কাঠের স্টেজে লাগেনি। আদালত জানিয়েছে, প্রশ্ন উঠতে পারে, শরীরে কিছু প্রবেশ করার সময় কেন নির্যাতিতা বাধা দিতে পারেননি? তদন্তে এটা প্রকাশ পেয়েছে যে, শ্বাসরোধ ও গলা টেপার কারণে নির্যাতিতা মৃত্যুর পথে চলে যান। যদিও তখনও তাঁর মৃত্যু হয়নি। তিনি বাধা দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। প্রথমে নির্যাতিতা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অভিযুক্তর কবল থেকে নিজেকে যে ছাড়াতে পারেননি, তা স্পষ্ট। আদালতের অভিমত, "এই মামলার সবথেকে বড় সাক্ষী নির্যাতিতা নিজে। কিন্তু তাঁর বক্তব‌্য জানার সম্ভাবনা নেই। তাই পারিপার্শ্বিক ও মেডিক‌্যাল প্রমাণ খতিয়ে দেখা হয়েছে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • গণধর্ষণ হয়নি, আর জি করে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিল আদালত।
  • নির্দেশের কপিতেই বিচারক স্পষ্ট জানিয়েছেন, নির্যাতিতার দেহে ‘মাল্টিপল পেনিট্রেশন’-এর কোনও প্রমাণ মেলেনি।
  • যেকোনও গণধর্ষণের ঘটনায় এটাই ‘সিনে কোয়া নন’বা অপরিহার্য শর্ত। তাই এই ব‌্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এই ঘটনাটি গণধর্ষণ নয়।
Advertisement